গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন জেসিয়া জাকির ইকতা নামে এক শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নেওয়া এই ভর্তিচ্ছুর পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ছিলো ৩৬; ১০০ এর মধ্যে। এরপর জগন্নাথ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির কাগজপত্রে একই স্কোর আসলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সেটি বেড়ে ৪২ দশমিক ২৫ হয়ে যায়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ভর্তি কার্যক্রমে গুরুতর ত্রুটির অভিযোগ তুলেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমের অষ্টম মেধাতালিকায় এসে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ভর্তি পরীক্ষায় ৬টি (ইংরেজি, বাংলা, পদার্থ ও রসায়ন আবশ্যিক আর ঐচ্ছিক গণিত, জীববিদ্যা ও আইসিটি; যেকোন দুটি) বিষয়ে উত্তর দেওয়ার কথা থাকলে ওই শিক্ষার্থী ৭টি বিষয়েই উত্তর করেছে। ফলে প্রাথমিকভাবে গুচ্ছের রেজাল্টে তার স্কোর ছিল ৪২.২৫। পরবর্তীতে সেটা কারেকশন করে ৩৬ হয়েছে।
কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অসাবধানতাবশত টোটাল স্কোরটা (৪২.২৫) চলে আসছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তবে প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই শিক্ষার্থী যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে তাহলে তার ভর্তি বাতিল করা হবে।
তথ্য মতে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম মেধাতালিকা থেকে গণিত বিভাগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী জেসিয়া জাকির ইকতা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় রোল ছিল ১৪২৭০। আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাক্রম ৩৯৬৭। তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সকল বিষয়ে উত্তর করেছিল।
অর্থাৎ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ঐচ্ছিকের আইসিটি/বায়োলজি, ম্যাথ/আইসিটি, বায়োলজি/ম্যাথ না দাগিয়ে সবগুলোর উত্তর করেছিল। তবে তার গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নাম্বার ৩৬। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও তার এই স্কোর (৩৬)। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চয়েস ফর্মে তার স্কোর দেখায় ৪২.২৫। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে তার নাম্বার দেওয়া না হলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নাম্বার যোগ করা হয়েছে। এখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
ভর্তি কার্যক্রমে গুরুতর ত্রুটির অভিযোগ তুলে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকায় এই রকম অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না। একটি মেয়েটি গুচ্ছ পরীক্ষায় ম্যাথ উত্তর না করেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চয়েস ফর্মে ম্যাথ নম্বর যোগ করে দিয়ে তাকে বিষয় দেওয়া হয়েছে। সে এখন গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমের টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, ওটা আসলে অমিট হওয়ার কথা। বাই মিস্টেক ওটা কনসিডারশনে আসছে। ওটা এলিমিনেট হয়ে যাবে। আগামীকাল ডিসিশন হবে ব্যাপারটা কি হচ্ছে। আগামীকাল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৬টি বিষয়ে উত্তর দেওয়ার কথা। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী ৭টি বিষয়েই উত্তর করেছে। প্রাথমিকভাবে গুচ্ছের রেজাল্টে তার স্কোর ছিল ৪২.২৫। পরবর্তীতে গুচ্ছ সেটা কারেকশন করেছে। কিন্তু আমাদের এখানে অসাবধানতাবশত টোটাল স্কোরটা চলে আসছে। কিন্তু তার এক্সাক্ট স্কোর হবে ৩৬। একটা বাদ যাবে। গতকাল বিষয়টি নজরে আসার পর আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি এটা আবার রিচেক করেছে; এরকম ভুল আরো আছে কিনা। কিন্তু যাচাই করে দেখা গেছে এমন ভুল আর হয়নি।
এ শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আগামীকাল ভর্তি কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তাছাড়া ওই শিক্ষার্থী নিজেও ইলিগ্যাল কাজ করেছে। ইনটেনশনালি সে হয়তো ছয়টি বিষয়ে উত্তর করেছে। যে যদি ভর্তি হয়ে থাকে তাহলে বাতিল হবে।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়ে পাশ করেও বেরিয়ে গেছে। এরপরও যদি আনফেয়ার কোন কিছু ধরা পড়ে তাহলে এমন শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল হয়েছে। সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে।”