কুবি প্রতিনিধি: গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা-২০২৪ ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রে না এসে সম্মানী নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের অভিযোগ তারা ক্ষমতা অপব্যবহার করে এই সম্মানী গ্রহণ করেছেন।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১০ মে ভর্তি পরীক্ষার অংশ হিসেবে উপাচার্য ১৫ হাজার টাকা ও কোষাধ্যক্ষ ১২ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে তাদের কেউই পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেননি। এদিকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ ভর্তি পরীক্ষার দিন বাংলোতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা৷
এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সি ইউনিটের অর্থ কমিটির সদস্য সচিব শুভ্র ব্রত সাহা বলেন, সদস্য সচিব হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এ বিষয়ে আহবায়ক ভালো বলতে পারবে।
ভিসি আর ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে টাকা নিতে পারে কিনা জানতে চাইলে অর্থ কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমি যতটুকু জানি ভিসি বাংলো ক্যাম্পাসের অন্তর্ভুক্ত। তবে আমি অর্থ কমিটির দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু অর্থ বণ্টন করে অর্থ দপ্তর। এতগুলো মানুষের টাকা এক ঘণ্টার মধ্যে বণ্টন করা সম্ভব না বিধায় পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে বণ্টন করা হয়।
অর্থ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর নাসির উদ্দিন বলেন, স্যার বাংলোতে ছিল। কিন্তু এটাও ক্যাম্পাস। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।
সি ইউনিটের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ভিসি আর ট্রেজারার বাংলোতে ছিল। তবে উপ-উপাচার্য আমার সাথে সার্বক্ষণিক ছিল। তিনি আমার সাথে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছিল। তারা ক্যাম্পাসে কেন আসেননি সেটা আমি জানি না। এখন মনে করেন ওনারা টপ লেভেলের। আমি তো আর বলতে পারবো না ওনাদের সাথে কথা বলেন। আমাদের তারা নির্দেশ দেয় সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করি। এখন তারা ক্যাম্পাসে আসছে কিনা সেটা তারা ভালো বলতে পারবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, যে লোকটা সেলারি শিট চুরি করতে পারে, (কর করাপশন ইনভলব) আসলে সে লোকটা নিয়ে কমেন্ট করতে আমার রুচিতে বাধে। সে সারাদেশের গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে আছে যতদূর জানি। তবে সে জায়গা থেকে ন্যূনতম দায়িত্ববোধ মনে না করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিবেন অনিয়মের মাধ্যমে। তবে ভিসি এবং কোষাধ্যক্ষ দুইজনই সংঘবদ্ধ, দুইজনেই যেমন সন্ত্রাসী তেমন দুর্নীতিতেও। তিনি যে বলছেন ‘দুর্নীতি-উন্নতি’ সে এটাতেই বিশ্বাসী।
সম্মানী গ্রহণের বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, তোমার কাছে ভুল তথ্য আছে। আমি অফিস করেছি, স্বাক্ষরও করেছি।
তবে কোষাধ্যক্ষ অফিসের সেকশন অফিসার নমিতা পাল বলেন, আমি যতখন ছিলাম স্যারকে দেখি নাই। এরপর আমি পরীক্ষার ডিউটিতে চলে যায়। পরীক্ষা শেষ বাংলোতে গেলেও স্যারকে পাওয়া যায়নি।
উপাচার্যের পিএস টু ভিসি হোসাইন মোরশেদ ফরহাদ বলেন, স্যার ক্যাম্পাসে আসেন নাই। তবে বাংলোতে ছিলেন। কেন আসে নাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়ত মনমানসিকতা ভালো নাই, এই ধরনের কাজকর্ম চললে সবার তো মনমানসিকতা খারাপ থাকতে পারে।
পরীক্ষার দায়িত্ব পালন না করে সম্মানী গ্রহণ করতে পারে কি না জানতে চেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। পরে বাংলোতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।