খুদে শিল্পী সুমন শেখ অল্প বয়সে বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গান গেয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। কয়েক বছর ধরে সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন স্থানে টেবিল ও বেঞ্চে কয়েন ঠুকে গান গেয়ে দর্শকদের মুখে হাসি ফোটাতো সুমন। সোমবার (২ মে) বিকেল ৪টার দিকে মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সুমন।
অভাবের সংসারে মাত্র ১৪ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরেন সুমন। সিরাজগঞ্জ সহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় গান গেয়ে দর্শকদের খুশি করে যে আয় করতে তা দিয়েই চলতো সংসার। এখন সংসার চলবে কিভাবে সে চিন্তায় পরিবারটি দিশেহারা।
সুমনের মা সুমি বেগম বলেন, তার দুটি মেয়ে সন্তান আছে। একটা ক্লাস টুতে পড়ে আরেকটার বয়স সাত মাস। ওর বাবা ঠিকভাবে গ্রামে কাজ পায় না। এই ধান কাটার কয়েক দিন শুধু কাজ পাবে। এরপর পাবে না। ওই টাকা দিয়ে সংসার চালাবো কীভাবে? আবার মেয়েদের পড়াশোনাই বা কীভাবে করাবো। মাথা গোজার ঠাঁইটুকু ছাড়া আমাদের কোন জমিজমা নেই।
সুমনের বাবা আল-আমিন শেখ বলেন, সাত বছর বয়সেই সুমনের মৃগী রোগ ধরা পড়ে। অর্থের অভাবে ছেলেটাকে ঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। তবে ও বিভিন্ন হাট-বাজারে গান গেয়ে সপ্তাহে কিছু টাকা আয় করতো। অভাবের পরও দীর্ঘ কয়েক মাস যাবত একশো-দুইশো করে ১৩ হাজার টাকা সঞ্চয় করি। সেটা নিয়ে বগুড়ায় এক ডাক্তারের কাছে গেলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার পর কিছু ওষুধ লিখে দেয়। মৃগীরোগ দেখা দিলে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরামর্শ দেয়। সেই পরামর্শ অনুযায়ী যখনই ওই রোগ দেখা দিতো তখন ইঞ্জেকশন দিলে ঠিক হয়ে যেত। কিন্তু এবার আর ঠিক হলো না। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান মারা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এদের শুধু মাথা গোজার ঠাঁই আছে, তাছাড়া আর কিছু নেই। সমাজের বিত্তবানরা যদি কেউ সাহায্য করে তাহলে পরিবারটার অনেক উপকার হবে।