বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের বর্ধিত মূল্য কমানো ও ক্যাম্পাসের হলগুলোতে খাবারের মান বাড়ানোর দাবি জানিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
রোববার (০৪ জুন) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট-এর যৌথ আয়োজনে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের ডাইনিং থেকে খাবার এনে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে টাঙানো হয়। এবং প্রতিটি খাবারে উপর সাদা কাগজে হলের নাম লিখে রেখেছেন সংগঠনের সদস্যরা। খাবারের মান পরিদর্শন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আহবান জানান তিনি।
এসময় ‘ডাইনিং ও ক্যাফেটারিয়ার খাবারের পর্যাপ্ত ভর্তুকি দাও’, ‘ক্যাম্পসে খাবারের মূল্য কমাও ও মান বাড়াও’, ‘ক্যাফেটারিয়ায় পর্যাপ্ত সাধারণ মিল নিশ্চিত করো’, ‘খাবারের মান বৃদ্ধি করে পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করো’, ‘ক্যাফেটারিয়ায় খাবারের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করো’ এমন সব প্লেকার্ড প্রর্দশনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান সংগঠনের সদস্যরা।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানিব বলেন, মানহীন খাবার গ্রহণ করায় আমরা পড়াশোনায় ফোকাস করতে পারছি না। এছাড়াও দাম বৃদ্ধির ফলে অনেক মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীর জীবনে যা মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবারের দাম কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের মান নিশ্চিত করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটাই প্রত্যাশা এ শিক্ষার্থীর।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিব বলেন, আমরা এখানে পড়াশোনা করতে এসেছি। কিন্তু আমাদের হলের ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ায় যে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয় তা খেয়ে বেঁচে থাকায় অসম্ভব সেখানে শিক্ষার্থীরা তো পড়াশোনা, গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে, তারা কিভাবে বেঁচে থাকবে। তাছাড়া এসব খাবারের কোনো তদারকিও করা হয় না বরং দাম বাড়ানো হয়েছে। এসব খাবার খেয়ে একটি পুঙ্গ জাতি ছাড়া আর কিছুই গঠিত হবে না।
অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা রিয়ান আলী বলেন, আমরা খাবারের সমস্যা, খাবারের নিম্ন মান,খাবারের দাম বৃদ্ধি এই সমস্যা নিয়ে এখানে দাড়িয়েছি। দেশে দ্রব্য মূল্যের দাম যখন অতি চরমে ঠিক তখনই ক্যাফেটারিয়ার খাবারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। হলগুলো এবং ক্যাফেটেরিয়াতে যে খাবার সরবরাহ করা হয় তা হচ্ছে শূন্য ক্যালোরির খাবার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনই শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ভাবে না।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সংগঠনের সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন,দেশে মুদ্রাস্ফীতির কারনে সাধারণ পরিবারগুলোর দৈন্যদশা সেখানে প্রশাসন খাবারের মান নিম্নমুখী করে ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দরকার সেখানে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো দিকে নজর দিচ্ছে। ক্যাফেটারিয়ায় এসির ব্যবস্থা করা হচ্ছে অথচ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন পুষ্টিসমৃদ্ধি খাবার। প্রশাসন কাজী নজরুল মিলনায়তনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ২০কোটি টাকা বাজেট করে সেখানে তারা ক্যাম্পাসের ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের নিশ্চয়তা তারা দিতে পারে।