আগামী ২ মার্চ থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির মূল চারটি বই এখনও ছাপা শুরু হয়নি। বইগুলো হচ্ছে—সাহিত্য পাঠ (গদ্য ও কবিতা), বাংলা সহপাঠ (উপন্যাস ও নাটক), ইংলিশ ফর টুডে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ইংরেজি ও বাংলা ভার্সন)।
অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্টরা বই ছাপার বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়ায় দেরিতে বই ছাপা শুরু করতে হবে কাজ পাওয়া মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত বই ছাপার চূড়ান্ত আদেশ পায়নি মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। এনসিটিবি ছুটির দিন শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বই ছাপার অনুমোদন দেবে বলে জানা গেছে। তারপর বই ছাপা শুরু করবে মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
এবার পাঁচটি লটে মোট বই ছাপতে হবে ৪২ লাখের বেশি। কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে অগ্রণী প্রিন্টার্স, ব্রাইট প্রিন্টার্স, আনন্দ প্রিন্টার্স ও ফাহিম প্রিন্টার্স। অগ্রণী প্রিন্টার্স কাজ পেয়েছে দুই লট। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। চুক্তি অনুযায়ী ১০ দিনের মধ্যে বই ছাপিয়ে বাঁধাই করে সারা দেশে সরবরাহ করতে হবে।
তবে বই ছাপার চূড়ান্ত অনুমতি আজ বৃহস্পতিবারও (২৪ ফেব্রুয়ারি) পায়নি মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠাগুলো। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন চূড়ান্ত আদেশ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন মুদ্রণ শিল্প মালিকরা।
ব্রাইট প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী এস এম মহসিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা ২২ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করেছি। চুক্তি অনুযায়ী দশ দিনে ৪২ লাখের বেশি বই সরবরাহ করতে হবে। আজ বইগুলোর ইনার ও কাভারসহ সবটা দিয়েছে এনসিটিবি। কাল অফিস খোলা রাখবে তারা। কাল প্রিন্ট অর্ডার দেবে এনসিটিবি। এনসিটিবি ফাইনাল প্রিন্ট অর্ডার না দেওয়া পর্যন্ত আমরা তো বই ছাপতে পারবো না। কাল যদি দেয় তাহলে আমরা দ্রুত ছাপতে পারবো। বই ছাপতে বেশি সময় লাগবে না। বই ছাপা হলে শিক্ষামন্ত্রী নতুন বই উদ্বোধন করবেন। ’
কেন চুক্তিতে দেরি হলো জানতে চাইলে এস এম মহসিন বলেন, ‘করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেলো। কবে খুলবে সেই অনিশ্চয়তায় হয়তো দেরি হয়েছে—এটি আমার ধারণা। ’
আনন্দ প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী রাব্বানী জাব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ২২ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করেছি, আজ সিডিতে বইয়ের প্রুফ জমা জমা দিয়েছি। এগুলো ফেরত এলে কালকের মধ্যে গোছাতে পারবো। বই ছাপতে বেশি সময় লাগবে না। আশা করি বই ছাপা সময় মতো সম্পন্ন হবে। ’
নির্ধারিত সময়ে বই ছাপিয়ে সারা দেশে সরবরাহ করা সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে রাব্বানী জাব্বার বলেন, আগামী ২ মার্চ যদি বই উদ্বোধন করা হয় তাহলে ৩ বা ৪ মার্চ থেকে সারা দেশে বই পাওয়া যাবে। ঢাকায় পরদিন থেকেই পাওয়া যাবে। আমাদের এক বছরে বই বাজারজাত করার কথা রয়েছে। ‘
এনসিটিবি’র উৎপাদন নিয়ন্ত্রক ও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি ছিল। দেরি হয়েছে কবে একাদশের ক্লাস শুরু হবে এটি জানার জন্য। কোভিডের কারণে কবে উদ্বোধন করা যাবে তা ঠিক ছিল না। শুক্রবারের মধ্যে আমরা অনুমোদন দেবো। কোনও সমস্যা হবে না। ’
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার থেকে বই ছাপা শুরু হলেও সব বই ছাপা, বাইন্ডিং ও সরবরাহ করা ২ মার্চের মধ্যে সম্ভব নয়। কিছু বই ছাপিয়ে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।