নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩ জুলাই) বেলা আড়াইটায় জবি ক্যাম্পাসে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরান ঢাকার তাতীবাজারে রাস্তা অবরোধ করে সড়কেই অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘নো কোটা, নো ডিসক্রিমিনেশন’, ‘সংবিধানের মূল কথা, সবার জন্য সমতা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘সংগ্রাম না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, এই বাংলায় হবে না, বৈষম্যের ঠিকানা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন এবং কোটা বিরোধী এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহান বলেন, আমরা মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে এক শ্রেণির মানুষ লাভবান হবে সেটি মেনে নেওয়ার মতো নয়। অবিলম্বে কোটা পদ্ধতি স্থায়ীভাবে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। এমন দাবির পেছনে শিক্ষার্থীদের অনেক কারণ আছে। আমরা মনে করি, কোটা ব্যবস্থা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আরেক শিক্ষার্থী মেহেরুন্নেসা হিমু বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশে নারী কোটা সহ যত ধরনের কোটা আছে সব বাতিল করা হোক। কারণ আমরা নরীরা এখন আর মেধার দিক থেকে পিছিয়ে নেই। চাকরির বাজারে যদি মেধার যথাযথ মূল্যয়ন না করা হয় তাহলে সেটা হবে ভবিষ্যতের জন্য অশনী সংকেত। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
৪ দফা দাবিতে এ আন্দোলন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় :
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২. ‘১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।