The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিলের দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীদের শিববাড়ি অবরোধ

খুবি প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বাহলের রায় বাতিল ও কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকেল ৫টায় খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিন দুপুর ৩টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে তাঁরা মিছিল করছেন। প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন। কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল ও কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত দাবিতে অনড় তাঁরা।

এ দাবিতে মহানগরীর শিববাড়ি অবস্থান নিলে সেখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়ক অবরোধ করে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন কয়েকশ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। মহানগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টির ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ জনগণ।

আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হাদি চত্বরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। দুপুর ৩টার দিকে কয়েক শত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাতে প্লাকার্ড নিয়ে নগরের গল্লামারী, নিরালা ও ময়লাপোতা মোড়ে বিক্ষোভ করেন এবং ময়লাপোতা মোড় হয়ে শিববাড়ি অবস্থান নেয়। এসময় তাঁদের হাতে জাতীয় পতাকা, ঢোল, প্ল্যাকার্ডসহ বিভিন্ন ব্যানার ছিল। এ সময় পুরো খুলনা শহরের যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে যায়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরবর্তীতে এ সমাবেশে খুলনার সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়।

এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মহানগরীর শিববাড়ি মোড়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নেমেছে, রাজপথ কেপেছে,’ ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে,’ ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন,’ ‘ছাত্রসমাজের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন,’ ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘৭১ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার,’ ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ এমন নানান স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটার কোনো স্থান নাই। কোটা বাতিল করে মেধার মূল্যায়ণ করতে হবে সব জায়গায়। নাইলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবেনা। আমরা চাই অতিদ্রুত কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে মেধার মূল্যায়ণ করা হোক সবখানে। বৈষম্যমূলজ কোটা পদ্ধতি বাতিল না হলে বাংলার রাজপথে আগুন জ্বলবে।

সমাবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে দেশে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন। তার মধ্যে এই বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহাল করে মেধাবীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবো না। আমরা চাই অতি দ্রুত কোটা পুনর্বাহলের রায় বাতিল করা হোক এবং মেধাবীদের মূল্যায়ণ করা হোক।’

আরেক শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলো কি আজকের এই দিন দেখার জন্য? দেশটা কি এখন শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতিপুতিদের? এই প্রহসনমূলক কোটা পুনর্বহালের মাধ্যমে আমাদের সাথে অবিচার করা হচ্ছে। এই রায় বাতিল না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো। কোটা বাতিল না করে রাজপথ ছাড়বো না আমরা।’

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে, মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপরই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.