কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিজ্ঞান ভিত্তিক সংগঠন সায়েন্স ক্লাবে’র উদ্যোগে একদিন ব্যাপী জাতীয় বিজ্ঞান উৎসব-২০২৪ এর আয়োজন করা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই উৎসবে পঞ্চাশটির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেড় হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার (২৪ শে ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন উৎসবের উদ্বোধন করেন।
সায়েন্স উৎসবে— সাইন্স অলিম্পিয়াড, রুবিক্স কিউব কম্পিটিশন, সকার বট প্রতিযোগিতা, প্রজেক্ট শো, এক্সিবিশন, রোবট ফাইটিংসহ মোট সাতটি সেগমেন্টে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও, বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে মোট ৮০ টি স্টলে তাঁরা বিভিন্ন প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন। যার মধ্যে অন্যতম স্মার্ট সিটি, স্মার্টা রেল গেইট, স্মার্ট ভয়েস কন্ট্রোলার গাড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট সিটি, ইউনিক সিটি, অর্বিটাল সিটি, সেইভ আর্থ, অটোমেটিক ফায়ার এক্সটেংগুইসার, সোলার এনার্জি, স্মার্ট ব্রিজ, বর্জ্য পদার্থের পরিবেশ বান্ধব বহুমুখি ব্যবহার, ফায়ার লাইটার রোবট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী, পরিবেশের উপর গ্রিন হাউজ গ্যাসের প্রভাব ও তার প্রতিকার, ইউন্ড এনার্জি, রিসাইকেল ও সোলার সিস্টেম, ফায়ার এলার্ম সিস্টেম, বায়োস্কোপ, সেইফ ড্রাইভ-সেইফ হাউজ, জীবনের উৎপত্তি, জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং ইত্যাদি।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, প্রজেক্টগুলোতে রোবোটিক্সের বহুমাত্রিক ব্যবহার, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণরা কিভাবে নিজেদেরকে দক্ষ করে গড়ে তুলবে, গ্রিন হাউস গ্যাসের ব্যবহার, জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পৃথিবীর রক্ষা করা, জনসাধারণের সোলার এনার্জি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিকূলতা থেকে পৃথিবী রক্ষার কৌশল।
প্রতিযোগিতার টেকসই, বাস্তবায়ন, পরিবেশ রক্ষা বিভিন্ন মানদন্ডের উপর ভিত্তি করে মোট ১০০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। যেখানে বিজ্ঞান অনুষদের ৩০ জন শিক্ষক বিচারক ছিলেন।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া, নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা সিফা বলেন, আজকে এত বড় একটা আয়োজনের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমাদের প্রজেক্ট হচ্ছে ‘বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরি করা’। এরমাধ্যমে বিদ্যুৎ সংকট কমানো এবং আমদানির ফলে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে আশাকরি।
এছাড়াও জাতীয় বিজ্ঞান জাদুঘর থেকে একটি সায়েন্টিফিক বাস এক্সিবিশন করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন গবেষণা, অনুসন্ধান করতে পারবে, দেখতে পারবে। বিজ্ঞান জাদুঘর থেকে একটি টেলিস্কোপ দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।
বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ম্যাথ অলিম্পিয়াড কমিটির প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ। বক্তব্য শেষে, প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা এই গুণী অধ্যাপককে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা প্রশ্ন করেন।
গণিত উৎসবের বিষয়ে সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক চমৎকার প্রজেক্ট উপস্থাপন করেছে। যদি ভবিষ্যতে এগুলো বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে অনেক প্রতিবন্ধকতা সমাধান করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এবারের প্রদর্শনীতে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে রোবটিক্স। যেগুলোর মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব। তবে আজকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ হলেও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আজকে করা হচ্ছে, পরবর্তীতে জানানো হবে।