The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

কুবি শিক্ষার্থীদের তৈরি ‘রোবট নিকো’

কুবি প্রতিনিধি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মানবাকৃতির (হিউম্যানয়েড) রোবট তৈরি করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ান্টা রোবটিকস টিম। “নিকো’ নামের রোবটটি তৈরিতে এক বছর গবেষণা করেন দলের সদস্যরা।

রোবট ‘সিনা’ ও ‘ব্লুবেরি’র পর এবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তৈরি করেছেন ‘রোবট নিকো’। রোবট নিকো চলাফেরা বা কথা বলার পাশাপাশি মানুষের ছবি দেখে বলে দিতে পারবে পরিচয়। মানুষের সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারবে। যেকোনো এলাকা থেকে ছবি তুলে ভিডিও করে তথ্য দিতে পারবে নিকো। এছাড়া নিকোকে চাইলে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।

‘কোয়ান্টা রোবটিক্স’ নামের একটি টিম রোবট নিকো তৈরি করেন। টিমের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার প্রশাসনের অর্থায়নে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রোবটটি তৈরি করা হয়। প্রায় এগারো মাস কাজ করে রোবটটি তৈরি করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সনজিত মন্ডল ও ইনফরমেশন এন্ড কমিউকেশন এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়েল নাথ, অনিক চক্রবর্তী, তৌসিফ বিন পারভেজ ও মাহিন খান।

তারা জানান, রোবট নিকো তৈরির ক্ষেত্রে একাধিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন তারা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ফ্যাবল্যাবে কাজ করেন তারা। থ্রি ডি মডেল ডিজাইন করে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে রোবটের বডির বিভিন্ন অংশ তৈরি করা হয়। হিউম্যান ফেইস ডিটেক্টশন এন্ড ফেইস রিকগনিশনের মাধ্যমে রোবটকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রদান করা হয়। ফেইস ডিটেক্টশনের মাধ্যমে মানুষের মুভমেন্ট বুঝতে পারবে নিকো। এছাড়া ফেইস রিকগনিশনের মাধ্যমে মানুষের ছবি দেখে বা মানুষকে দেখেই চিনতে পারবে।

রোবট নিকো মুভমেন্ট করার জন্য তার শরীরে ২৯টি ডিগ্রি অব ফ্রিডম রয়েছে। রোবটের ব্রেইন হিসেবে রাস্পবেরি পাই ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য একে ব্যবহার করা যাবে।

এ বিষয়ে ‘রোবট নিকো’ টিমের সফটওয়্যার দেখভালের দায়িত্বে থাকা জুয়েল নাথ বলেন, রোবটিক্সকে জনপ্রিয় করতে আমরা কুমিল্লার স্কুল পর্যায়ে কাজ করেছি। পরে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের কাছে রোবটিক্সকে আরো জনপ্রিয় করতে জেলা প্রশাসক মহোদয় এগিয়ে আসেন এবং রোবট তৈরিতে বাজেট দেন। আমরা জানুয়ারী মাসের দিকে ‘রোবট নিকো’ তৈরির কাজ শুরু করি। এর আগে ‘রোবট সিনা ও ব্লুবেরি’ তৈরিতে যে উপকরণ বা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি সেগুলার চেয়ে আরো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। পড়াশুনা, পরীক্ষার পাশাপাশি রোবট তৈরিতে সময় দিতে হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচ তলার একটি কক্ষ ল্যাবে কাজ করেছি।

তিনি আরও বলেন, আগে দুইটি রোবট চলাফেরা, কথা বলা, করোনার নমুনা সংগ্রহ, আগুনে সতর্ক করার মতো কাজ করতো। কিন্তু ‘রোবট নিকো’ তৈরিতে আমরা আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। এটি কথা বলার পাশাপাশি ছবি দেখে বা মানুষ দেখে বলে দিতে পারবে তার পরিচয়। চাইলে এমন রোবটকে মানুষ নিজের সহকারী হিসেবে কাজে লাগাতে পারবে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, আজকে নিকো অফিসিয়ালি প্রকাশ পেল। এটি রেসফন্স করতে পারে, নিজে নিজের পরিচয় দিতে পারে। ‘কোয়ান্টা রোবটিক্স’ ও ফ্যাবল্যাব সম্মিলিতভাবে এটা করেছে।

অর্থায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আমাদের সন্তানদের কাছে তুলে ধরা। প্রযুক্তিকে বাচ্চাদের কাছে হাতে-কলমে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। কারণ আগামীর বিশ্ব শাসন করবে গণিত, বিজ্ঞা ও প্রযুক্তি। আমাদের সন্তানেরা যেন প্র্যাকটিক্যালি এসব দেখে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শেখায় উদ্বুদ্ধ হয়, উজ্জীবিত হয়। হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, নার্সিং, রোগীদের বিভিন্ন সার্পোট দিতে রোবট সহযোগিতা করবে। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে রোবটিক্সকে এগিয়ে নেয়ার। রোবটিক্স ও প্রোগ্রামিংকে জনপ্রিয় করে তুলতে মূলত এ পরিকল্পনা করা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.