হেদায়েতুল ইসলাম নাবিদ: এগারো মাস পূর্ণ হওয়ার পরেও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি গুচ্ছভুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি)। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম। এতে সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি চূড়ান্ত ভর্তি প্রক্রিয়া।
এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৮টি সিট খালি রয়েছে। পুনরায় মাইগ্রেশন হলে শূন্য সিটের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো.মুজিবুর রহমান মজুমদার। তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমরা গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গুচ্ছে থাকতে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে এটি সমাধান করার চেষ্টা করছি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেক সময় লেগে যায়। দীর্ঘমেয়াদী এই ভর্তি কার্যক্রমের জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। গুচ্ছের বাইরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমাদের ব্যাচমেটরা প্রায় দুই সেমিস্টার শেষ করে ফেলেছে। আমরা এখনো প্রথম সেমিস্টারে আটকে আছি। এতে তাদের থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি। কিন্তু গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মেরিট প্রকাশিত হচ্ছে, ফলে এক সাবজেক্টের ক্লাস চলাকালীন মাইগ্রেশনে অন্য সাবজেক্ট পাওয়ার পর চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া আমাদের সঠিক সময়ে সেমিস্টারে নেওয়ার কথা থাকলেও নতুন করে মেরিট ও মাইগ্রেশনের কারণে তা পিছিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বি ইউনিটের আহ্বায়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, শুরু থেকেই আমরা বলেছি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কখনো সুফল বয়ে আনবে না। এটা দীর্ঘসূত্রতা হবে, কোয়ালিটি শিক্ষার্থী পাওয়া কঠিন হবে ও শিক্ষার্থীদের জন্যও কষ্ট হবে। শুধু খরচ বিবেচনায় যেটি চিন্তা করা হয়েছে, এটি কখনো ভালো হয়নি। এই দীর্ঘসূত্রতা হবে ধারণা করেই আমরা বলেছিলাম এটা আমাদের জন্য কঠিন হবে। আমরা চাইলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। কারণ এর নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই। এইভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া চলতে থাকলে আমরা সেমিস্টার কবে শেষ করবো! অথচ ২০২৩-২০২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের এখন দ্বিতীয় সেমিস্টারে থাকার কথা। তারা এখনো প্রথম সেমিস্টারে পড়ে আছে। এর জন্য শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি এই পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ করছি, এটা আমাদের জন্য খুব বেশি কার্যকর না। এর চেয়ে আমরা আগে নিজস্ব পদ্ধতিতে যেভাবে পরীক্ষা নিতাম সেভাবে নিলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ালিটির দিক থেকে আরও উন্নতি করবে বলে আমি মনে করি।