নভেম্বরে পর্দা উঠতে যাচ্ছে “দ্যা গ্রেটেষ্ট শো অন আর্থ” বিশ্বকাপ ফুটবলের।মরুর দেশে বিশ্বমঞ্চে খেলবে বাংলাদেশ।আপাতত এমনটা অলীক স্বপ্ন বটে।তবে মাঠের লড়াইয়ে থাকতে না পারলেও বিশ্ব আসরে অন্য দিক থেকে ঠিকই থাকছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
কাতার বিশ্বকাপের ৮টি স্টেডিয়াম নির্মাণ,যাতায়াত ব্যাবস্থা,অবকাঠামোগত উন্নয়নে রয়েছে বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের বিশেষ অবদান।প্রবাসী শ্রমিকদের এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দোহার কার্নিশ ইসলামিক আর্ট মিউজিয়ামের ফ্ল্যাগ প্লাজায় উত্তলন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ১১৯ টি দেশের পতাকা।যেখানে স্ব গৌরবে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকাও।
পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের সাফল্য বেশ প্রসংশনীয়।এইবারও কাতার বিশ্বকাপের দেখা যাবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্টিকারযুক্ত টি-শার্ট।ফিফার এই অফিসিয়াল টি-শার্ট শুভা পাবে ম্যাচ দেখতে আসা গ্যালারির দর্শক ও সমর্থকদের গায়ে।বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৬ লাখ পিস ফিফার অফিশিয়াল টি-শার্ট।শুধু এবার নয়।২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও ফিফার লগু সম্বলিত ২ লাখ পিস অফিসিয়াল জ্যাকেট তৈরি করেছিল সনেট টেক্সটাইল গ্রুপ।
কাতার বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনায় নিয়োজিত থাকবেন সারা বিশ্বের ৩৬ জন রেফারি,৬৯ জন সহকারী রেফারি ও ২৪ জন ভিডিও ম্যাচ অফিসিয়াল। তাদের সঙ্গে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করবেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের বালুগোট্টা গ্রামের ছেলে শিয়াকত আলী।৯ বছর ধরে কাতারে সহকারী রেফারি হিসেবে কাজ করছেন তিনি।এরইমধ্যে পরিচালনা করেছেন ঘরোয়া ফুটবলের প্রায় চার হাজার ম্যাচ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে গর্বিত লিয়াকত।
বিশ্বের একমাত্র প্রতিস্থাপনযৌগ্য স্টেডিয়াম কাতারের ‘৯৭৪”। এই স্টেডিয়ামে ম্যাচ চলাকালীন মাঠের প্রধান চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত থাকবেন বাংলাদেশি নারী চিকিৎসক আয়েশা পারভিন।এর আগেও ২০২১ সালে আরব কাপের ম্যাচে ফিজিশিয়ান হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি।বাংলাদেশি এই চিকিৎসকের সাফল্যে খুশি পরিবার, আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে বাংলাদেশি কমিউনিটি।
২০৫ দেশের ৫৮ হাজার আবেদনকারী থেকে বাছাই করে দক্ষ,অভিজ্ঞ ও চৌকাস ২০ হাজার ভলান্টিয়ার নিয়োগ দিয়েছে ফিফা।যার মধ্যে সুযোগ পেয়েছে ২ শতাদিক বাংলাদেশি নাগরিক।বিশ্বকাপের ৪৫টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিপুল সংখ্যক এই ভলান্টিয়ার কাজ করবেন।স্টেডিয়াম,ট্রেনিং সাইট,বিমানবন্দর,ফ্যান জোন, হোটেল এবং গণ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান করবে তারা।
ঘড়ির কাটায় আর মাত্র ২০ দিন।কাতারের সাথে ৪ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব থাকলেও বিশ্বকাপ আমেজের কোন কমতি থাকবেনা ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিটা জনপদে। মাঠের ফুটবলে না থাকলেও এই ছোট ছোট অর্জনে কাতারের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশকে গর্বিত করবে লিয়াকত,আয়শা কিংবা বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা।