রাবি প্রতিনিধি: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পেনশনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে ফের দু’দিনের অর্ধদিবস ও একদিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতি। দাবি আদায় না হলে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রবিবার (৩০ জুন) থেকে। শিক্ষকদের কর্মবিরতির এমন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটির পর রাবিতে শ্রেণি কার্যক্রম আদৌ শুরু হবে কি না সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মবিরতি ও আন্দোলন প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানানো হয়। এতে ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি; ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি এবং দাবি আদায় না হলে ১ জুলাই থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এবার শক্ত অবস্থানে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সকল বিভাগের সভাপতিকে লিখিতভাবে কর্মবিরতি ও আন্দোলনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০০ শিক্ষক পেনশনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে স্বাক্ষর দিয়েছেন।
অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার আন্দোলন প্রসঙ্গে জানান, “আপনারা দেখেছেন, আমরা একাধিকবার অবস্থান কর্মসূচি ও অর্ধ-দিবস কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি পালন করেছি; শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কোনো সমস্যা যেন না হয় সেদিকে সবসময় আমাদের নজর ছিল। কিন্তু এবার আমাদের শক্ত অবস্থানে যেতেই হচ্ছে। আমাদের দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বার্তা না আসলে আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে। শিক্ষার্থীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও, মূলত তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এই আন্দোলন করা হচ্ছে।”
রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “দেখুন এই আন্দোলনটি আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য যারা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন। একটি অসাধু চক্র চায় না বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্ররা আসুক; সেজন্যই পেনশনটা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে; মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে। আমরা অনতিবিলম্বে
পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ আমাদের তিন দফা দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চাই।”
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আপাতত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে; একাডেমিক কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত বিভাগগুলো তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকেই নিতে পারবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম জানান, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তো আর বলা যাচ্ছে না যে ক্যাম্পাস বন্ধ। শিক্ষকরা তাদের কিছু দাবির প্রেক্ষিতে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন; এখানে ক্যাম্পাস তো খোলা আছে। শিক্ষার্থীরা যথারীতি ক্যাম্পাসে নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ করতে পারবে। তবে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস ১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১৫ জুলাই থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”