কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রা উপজেলায় সুন্দরবনের শাখবাড়িয়া নদীর নিকট হতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ. লীগ নেতা সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে মাছের ঘেরের জমি থেকে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় জমির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুন্দরবনের শাখবাড়িয়া নদীর বাঁধ ধ্বসে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সরেজমিনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে দেখা যায় মার্কেট করার জন্য জায়গা ভরাটের পাশাপাশি বসত বাড়ি ভরাটের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন।
উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে নদীর খুব নিকটে মার্কেট ও নিজ বাড়ি ভরাট করার জন্য একমাস ধরে প্রশাসন কে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর খুব নিকট হতে বালু উত্তোলন করার ফলে মাছের ঘেরের মাটি বিশ থেকে পঁচিশ ফুট গভীর হয়েছে, এলাকাটি নদী ভাঙ্গন কবলিত হওয়ায় রাস্তা ভেঙ্গে যে কোনো সময় লোকালয়ে পানি প্লাবিত হতে পারে।কয়রার এলাকায় নদীর ভাঙনের অন্যতম কারণ বালু উত্তোলন।
স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জি.এম আবু ইসা গাজী বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় ভয়ে এলাকার লোকজন কিছুই বলতে পারে না, তিনি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘ এক মাস বালু উত্তোলন করে মার্কেটের জায়গা ভরাট করছেন।সুন্দরবনের অতি নিকট হতে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে, পাম্প, ড্রেজার বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বালু উত্তোলনের বিষয়ে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তাঁর মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুর রহমান বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক মাস ধরে বালু উত্তোলন বিষয়ে জানা নেই,বিষয়টি শুনেছেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।