The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪

কব্জিবিহীন হাতে লিখে জান্নাতুল পেল জিপিএ-৫!

২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারী আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসার ছাদে বিদ্যুৎ সঞ্চালক তারে জড়িয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের দুই হাত পুড়ে যায়। পরে তার হাতের কব্জিসহ কেটে ফেলতে হয়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হলেও বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়েছে। মামা ও খালার সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে কোন মতে চলছে তার জীবন সংগ্রাম। শারীরিক ও পারিবারিক এতোসব প্রতিবন্ধকতাও দমাতে পারেনি জান্নাতুলকে।

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় দুই হাতের কব্জিবিহীন হাতে লিখে জান্নাতুল পেয়েছেন জিপিএ – ৫। এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলো জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এই শিক্ষার্থী।

সাভারের আশুলিয়ার বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ হতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে জান্নাতুল ফেরদৌস। জান্নাতুল ফেরদৌস কুমিল্লা জেলার চাটখিল উপজেলাধীন মানিকপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। সে তার পরিবারের সাথে আশুলিয়ার পল্লীবিদুৎ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে।

শত প্রতিকুলতার মধ্যেও জান্নাতুলের ইচ্ছা সে ডাক্তার হবে। এ ব্যপারে জান্নাতুল ফেরদৌসের মা নিলুফা বেগম জানান, তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। যার কারনে পড়াশোনার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করা তার জন্য খুবই কষ্ট সাধ্য। অনেক সময় অনেকে আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতার কথা বললেও বাস্তবে কেই এগিয়ে আসেনি, শুধু মাত্র ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ছাড়া। চেয়ারম্যান সাহেব ওর পড়াশোনার জন্য আমাদেরকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তিনি সবার নিকট জান্নাতুলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া। আমি ডাক্তার হয়ে সকলের সেবা করতে চাই। অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার বাবা না থাকায় মা আমাকে অনেক কষ্ট করে পড়াচ্ছেন। তার একার পক্ষেও সম্ভব না। আমার বড় খালাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেন। বর্তমানে তাদের সাথেই থাকি। খালা-খালুই বর্তমানে আমার দেখাশোনা করেন। জান্নাতুল বলেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্যার আমাকে পড়াশোনার জন্য অনেক সাহায্য সহযোগিতার করেন। পাশাপাশি আমার স্কুলের স্যার-ম্যাডামরাও আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা গতবারের চেয়ে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ কম।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. পরীক্ষা ও ফালাফল
  3. কব্জিবিহীন হাতে লিখে জান্নাতুল পেল জিপিএ-৫!

কব্জিবিহীন হাতে লিখে জান্নাতুল পেল জিপিএ-৫!

২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারী আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসার ছাদে বিদ্যুৎ সঞ্চালক তারে জড়িয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের দুই হাত পুড়ে যায়। পরে তার হাতের কব্জিসহ কেটে ফেলতে হয়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হলেও বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়েছে। মামা ও খালার সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে কোন মতে চলছে তার জীবন সংগ্রাম। শারীরিক ও পারিবারিক এতোসব প্রতিবন্ধকতাও দমাতে পারেনি জান্নাতুলকে।

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় দুই হাতের কব্জিবিহীন হাতে লিখে জান্নাতুল পেয়েছেন জিপিএ - ৫। এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলো জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এই শিক্ষার্থী।

সাভারের আশুলিয়ার বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ হতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে জান্নাতুল ফেরদৌস। জান্নাতুল ফেরদৌস কুমিল্লা জেলার চাটখিল উপজেলাধীন মানিকপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। সে তার পরিবারের সাথে আশুলিয়ার পল্লীবিদুৎ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে।

শত প্রতিকুলতার মধ্যেও জান্নাতুলের ইচ্ছা সে ডাক্তার হবে। এ ব্যপারে জান্নাতুল ফেরদৌসের মা নিলুফা বেগম জানান, তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। যার কারনে পড়াশোনার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করা তার জন্য খুবই কষ্ট সাধ্য। অনেক সময় অনেকে আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতার কথা বললেও বাস্তবে কেই এগিয়ে আসেনি, শুধু মাত্র ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ছাড়া। চেয়ারম্যান সাহেব ওর পড়াশোনার জন্য আমাদেরকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তিনি সবার নিকট জান্নাতুলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া। আমি ডাক্তার হয়ে সকলের সেবা করতে চাই। অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার বাবা না থাকায় মা আমাকে অনেক কষ্ট করে পড়াচ্ছেন। তার একার পক্ষেও সম্ভব না। আমার বড় খালাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেন। বর্তমানে তাদের সাথেই থাকি। খালা-খালুই বর্তমানে আমার দেখাশোনা করেন। জান্নাতুল বলেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্যার আমাকে পড়াশোনার জন্য অনেক সাহায্য সহযোগিতার করেন। পাশাপাশি আমার স্কুলের স্যার-ম্যাডামরাও আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা গতবারের চেয়ে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ কম।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন