মোস্তাক মোর্শেদ, ইবিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ.এম.আলী হাসানের একটি ‘কণ্ঠসদৃশ’ অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাত ১২ টার পরে সাথি খাতুন নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি অডিও পোস্ট করা হয়৷ মোট চারটি খণ্ডের এই কলরেকর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ.এম.আলী হাসানের কণ্ঠের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
মোট চারটি কথোপকথনের অডিওটিতে শোনা যায়,
“(প্রথম ১ মিনিট ৪ সেকেন্ড)”
ঠিকাদার- স্যার আজকেতো জমা দিলাম কালকে ক্যাশ হবে। তো টাকাটা কখন কিভাবে আপনাকে প্লেস করবো সেটা যদি একটু বলতেন প্রিপারেশন নিয়ে নিতাম আরকি।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ) – তিনটার সময় কুষ্টিয়ায় দিতে পারবেন?
ঠিকাদার- তিনটার সময় পাবো না স্যার সাড়ে চারটার সময় পাবো।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- সাড়ে চারটার সময়…!!
ঠিকাদার- জি স্যার, ব্যাংক থেকে সাড়ে চারটার সময় পাবো। চারলাখ টাকাটা পাবো হইলো আপনার টোটাল টাকাটাই পাবো। আপনার চারলাখ টাকাটা আমি সাড়ে চারটায় পাবো সাড়ে পাঁচটার মধ্যে আপনাকে দিতে পারবো।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- ফোনে এসব বলার দরকার নাই।
ঠিকাদার- আচ্ছা স্যার। না না আমি সেইফ জায়গায় আছি স্যার।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ) – না না না ফোনে বলা যাবে না আরকি।
ঠিকাদার- তাইলে আমি ফোন দিলে রিসিভ করিয়েন একটু
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ) – হ্যা হ্যা।
ঠিকাদার- ওকে থ্যাংকিউ
“দ্বিতীয় কথোপকথন ১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড পর্যন্ত”
ঠিকাদার-আসসালামু আলাইকুম
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ) – কে বলছেন?
ঠিকাদার – মঈন সাহেব বলছিলাম
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- ভালো আছেন?
ঠিকাদার- কে বলছিলেন?
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- আমি ডাইরেক্টর প্লানিং বলছিলাম
ঠিকাদার- ওহ স্যার। স্যার ঐটা সাড়ে চারটার দিকে মনে হয় চারটার দিকে পেমেন্ট হবে।
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- আচ্ছা ঠিকাছে। আর এই বিষয়গুলো…
ঠিকাদার- না বলবো না। আমি বুজতে পারসি। আমি শুধু খালি ইঙ্গিত দিবো আপনাকে। যে আমার হয়ে গেছে কোথায় আসবো শুধু এটুকুই বলবো।
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- ঠিকাছে।
“তৃতীয় কথোপকথন ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড পর্যন্ত”
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- ও আচ্ছা হয়েছে?
ঠিকাদার- ব্যাংকে আছি স্যার। এখনো হয়নি স্যার হবে। বসে আছি ব্যাংকে। কনফার্মেশনের জন্য বসে আছি ঢাকার। হইলে আমি বলবোনে আপনাকে।
রেজিস্ট্রার (কণ্ঠসদৃশ)- আচ্ছা। আমি আছি শহরের ভিতরেই।
ঠিকাদার- আচ্ছা ঠিকাছে স্যার থাকেন।
“চতুর্থ কথোপকথন”
ঠিকাদার- আসসালামু আলাইকুম স্যার
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- কি অবস্থা?
ঠিকাদার- একটু অপেক্ষা করতে হবে স্যার।সমস্যা একটা হয়ে গেছে স্যার। আর একটু অপেক্ষা করেন স্যার।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- আর কত অপেক্ষা করবো!!
ঠিকাদার- একটু অপেক্ষা করেন স্যার। কোথাও বসে চা টা খান।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- কত সময় লাগবে বলেন
ঠিকাদার- এই আধাঘন্টার মতো লাগবে আর
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- কত!!
ঠিকাদার- ক্লিয়ারেন্স নিতে প্যাচ লেগে গেছে স্যার। ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে ঢাকা থেকে। এই আধাঘণ্টার মধ্যে হয়ে যাবে গা স্যার। একটু বসেন স্যার ঐ জায়গায় কোথাও যাইয়েন না।
রেজিস্ট্রার(কণ্ঠসদৃশ)- আরেহ বাবা এদিকে ব্যাংক বন্ধ করে দিয়ে দিবে তো।
ঠিকাদার- আরেহ বইলেন না ঢাকা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে।কিভাবে যে কি হয়েছে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আপনার যে চেক দিয়েছিল সেটি অনলাইন চেক না। এই চেক হলো ম্যানুয়াল চেক। আপনি অল্প একটু অপেক্ষা করেন। স্যার আপনি একটু অপেক্ষা করেন আসতেছি ব্যাগে ভরতেছি। প্লিজ একটু রাখেন।
তবে কণ্ঠটি তার কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ.এম.আলী হাসান। তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ এডিট করা। আমি আইনি পদক্ষেপ হিসেবে জিডি করতেছি। আমার সামাজিক মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটা করা হয়েছে। আমি কনফার্ম এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই করা হয়েছে। আমি বিচারের ভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম। আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম ‘ন্যাচারাল পানিশমেন্ট ‘ যাতে হয়ে যায়।