কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারে গত তিন মাসে অন্তত ৩০ টি সামুদ্রিক কাছিম মারা গেছে। গভীর সমুদ্রে জাহাজ অথবা জেলদের জালে আটকা পড়ে এসব কাছিম প্রতিনিয়তই মারা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ভেসে এসেছে একটি মা কাছিমের মরদেহ। দুপুরে অলিভ রিডলে প্রজাতির মৃত কাছিমটি উদ্ধার করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট এর একটি টিম। মৃত কাছিমের পেটে পাওয়া গেছে ১০৯ টি ডিম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
তিনি জানান, বুধবার রাতে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কাছিমটি ভেসে আসার খবর দেন জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম মৃত সামুদ্রিক কাছিমটি উদ্ধার করে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।
বেলাল হায়দার বলেন, প্রজনন মৌসুম হিসেবে মা কাছিমটি ডিম পাড়তে সমুদ্র উপকূলে আসতে চেয়েছিল। এতে সাগরে কোনো জাহাজ বা জেলেদের জালে আটকা পড়ে কাছিমটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে সে মারা যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাছিমটির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্র উপকূলে ডিম পাড়তে এসে সামুদ্রিক কাছিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি মারা যাচ্ছে । গত তিন মাসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অন্তত ৩০ টি সামুদ্রিক কাছিম মারা গেছে। এর মধ্যে গত মাসে শুধু পেছার দ্বীপ থেকে ৬ টি মৃত কাছিম উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৩০ কেজি ওজনের মা কাছিমটির দৈর্ঘ্য ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থ ২ ফুট ৩ ইঞ্চি। এর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর হবে । পেটে ১০৯টি ডিম ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে কচ্ছপটির দেহ ও ডিম গবেষণার জন্য বোরির ল্যাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ইনানী সৈকতের শফিরবিল এলাকায় একটি ইরাবতী প্রজাতির ডলফিন ও কাছিম উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে গত তিন মাসে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে অন্তত ৩০টি সামুদ্রিক কাছিম মারা গেছে।
তাফহীমুল আনাম/