The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪

এ.কে. ফজলুল হক: বাংলার কৃষির আন্দোলনের অগ্রদূত

হাসিবুল আলম প্লাবনঃ শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, প্রখ্যাত বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রনায়ক, বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব । দেশের কৃষি খাতে তার অবদান বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, যা তাকে বাংলার কৃষি ও কৃষকদের কাছে চ্যাম্পিয়নের খ্যাতি অর্জন করেছে।

এ.কে. ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের সাটুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার কর্মজীবন একজন আইনজীবী হিসাবে শুরু হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯১৩ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, কিন্তু তার মনোযোগ সর্বদা পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি ছিল, এখন যা প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। তিনি ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হন।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনতে কৃষি শক্তির প্রতি অটল বিশ্বাস ছিল শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের নীতির মূল চালিকাশক্তি। তিনি স্বীকার করেছিলেন যে ছোট কৃষকরা প্রায়শই তাদের কৃষি পদ্ধতি উন্নত করতে এবং তাদের ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ এবং অন্যান্য সংস্থান জোগাড় করতে অক্ষম ছিল। কৃষি খাতকে সমর্থন করার জন্য, তিনি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন এবং নতুন চাষের কৌশল চালু করেন। বাংলাদেশে সমবায় ব্যবস্থার প্রবর্তন তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। সিস্টেমটি কৃষকদের সম্পদ সংগ্রহ করতে এবং কম খরচে সার, বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ আনায়ন করার অনুমতি দেয়। ফজলুল হকের নেতৃত্বে, সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার সমবায় প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ক্ষুদ্র কৃষকদের অত্যাবশ্যক সহায়তা প্রদান করে।

বাংলার বাঘ খ্যাত শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের দৃষ্টি সমবায় ব্যবস্থার বাইরেও প্রসারিত ছিল। তিনি ইস্ট পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (ইপিএডিসি) প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা এই অঞ্চলে কৃষি উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও EPADC সার, কীটনাশক এবং অন্যান্য সারের প্রাপ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কৃষি প্রযুক্তি প্রচারে সহায়ক ছিল।

কৃষি খাতে শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের অবদান বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তিনি যে সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন তা ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে রয়ে গেছে এবং ইপিএডিসি দেশে কৃষি উন্নয়নের প্রচার অব্যাহত রেখেছে। পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকারের জন্য শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের অক্লান্ত পরিশ্রম বাঙালি স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে ভূমিকা পালিত করে।

শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের আদর্শিক অবদান সমগ্র বাংলাদেশর মানুষকে আজও অনুপ্রাণিত করে চলেছে। দেশের কৃষি খাতে তার অবদান অগণিত কৃষক এবং তাদের পরিবারের জীবন পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে এ.কে. ফজলুল হকের অটল অঙ্গীকার এবং অসাধারণ নেতৃত্ব বাঙালী জনগণের হৃদয়ে তাকে একটি বিশেষ স্থানে আদিষ্ট করেছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. এ.কে. ফজলুল হক: বাংলার কৃষির আন্দোলনের অগ্রদূত

এ.কে. ফজলুল হক: বাংলার কৃষির আন্দোলনের অগ্রদূত

হাসিবুল আলম প্লাবনঃ শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, প্রখ্যাত বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রনায়ক, বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব । দেশের কৃষি খাতে তার অবদান বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, যা তাকে বাংলার কৃষি ও কৃষকদের কাছে চ্যাম্পিয়নের খ্যাতি অর্জন করেছে।

এ.কে. ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের সাটুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার কর্মজীবন একজন আইনজীবী হিসাবে শুরু হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯১৩ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, কিন্তু তার মনোযোগ সর্বদা পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি ছিল, এখন যা প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। তিনি ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হন।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনতে কৃষি শক্তির প্রতি অটল বিশ্বাস ছিল শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের নীতির মূল চালিকাশক্তি। তিনি স্বীকার করেছিলেন যে ছোট কৃষকরা প্রায়শই তাদের কৃষি পদ্ধতি উন্নত করতে এবং তাদের ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ এবং অন্যান্য সংস্থান জোগাড় করতে অক্ষম ছিল। কৃষি খাতকে সমর্থন করার জন্য, তিনি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন এবং নতুন চাষের কৌশল চালু করেন। বাংলাদেশে সমবায় ব্যবস্থার প্রবর্তন তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। সিস্টেমটি কৃষকদের সম্পদ সংগ্রহ করতে এবং কম খরচে সার, বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ আনায়ন করার অনুমতি দেয়। ফজলুল হকের নেতৃত্বে, সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার সমবায় প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ক্ষুদ্র কৃষকদের অত্যাবশ্যক সহায়তা প্রদান করে।

বাংলার বাঘ খ্যাত শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের দৃষ্টি সমবায় ব্যবস্থার বাইরেও প্রসারিত ছিল। তিনি ইস্ট পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (ইপিএডিসি) প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা এই অঞ্চলে কৃষি উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও EPADC সার, কীটনাশক এবং অন্যান্য সারের প্রাপ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কৃষি প্রযুক্তি প্রচারে সহায়ক ছিল।

কৃষি খাতে শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের অবদান বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তিনি যে সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন তা ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে রয়ে গেছে এবং ইপিএডিসি দেশে কৃষি উন্নয়নের প্রচার অব্যাহত রেখেছে। পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকারের জন্য শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের অক্লান্ত পরিশ্রম বাঙালি স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে ভূমিকা পালিত করে।

শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের আদর্শিক অবদান সমগ্র বাংলাদেশর মানুষকে আজও অনুপ্রাণিত করে চলেছে। দেশের কৃষি খাতে তার অবদান অগণিত কৃষক এবং তাদের পরিবারের জীবন পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে এ.কে. ফজলুল হকের অটল অঙ্গীকার এবং অসাধারণ নেতৃত্ব বাঙালী জনগণের হৃদয়ে তাকে একটি বিশেষ স্থানে আদিষ্ট করেছে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন