চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। রোববার শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষার এ ফল প্রকাশিত হল।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পাশের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ছাত্র পাশের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ ও ছাত্রী পাশের হার ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শতকরা ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ পেয়ে যশোর বোর্ড শীর্ষ স্থানে রয়েছে। সর্বনিম্ন সিলেটে ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট জিপিও-৫ প্রাপ্ত হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এর মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র, ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী। প্রকাশিত ফলে যদি কাঙ্ক্ষিত ফল না আসে তাহলে সেটি পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন বা খাতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে পরীক্ষার্থীদের। আজ থেকে শুরু হবে এ কার্যক্রম। যা চলবে আগামী ১৯ মে পর্যন্ত। ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা।
রোববার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার (১৩ মে) এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা ১৯ মে পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষার প্রক্রিয়াও জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আবেদনের উপায়: প্রার্থীরা শুধু টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল ফোন নম্বর থেকে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য প্রথমে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <Space> রোল নম্বর <Space> বিষয় কোড লিখে 16222 নম্বরে Send করতে হবে।
এরপর ফিরতি এসএমএস-এ আবেদনের জন্য কত টাকা কেটে নেওয়া হবে সেটি জানিয়ে একটি পিন দেওয়া হবে। এতে প্রার্থী সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> Yes <Space> PIN <Space> Contact Number (যে কোনো অপারেটর) লিখে 16222 নম্বরে Send করতে হবে।
ফল পুনর্নিরীক্ষণের ক্ষেত্রে একজন প্রার্থী একই এসএমএস’র মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য কমা (,) দিয়ে বিষয় কোড আলাদা লিখতে হবে। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ের জন্য টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখবে RSC <Space> Dha <Space> Roll Number <Space) 101, 102, 107, 108। প্রতিটি পদের জন্য ১২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে অ্যাকাউন্ট থেকে।
পুনর্নিরীক্ষণে খাতার চার বিষয় দেখা যায়: শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, পুনর্নিরীক্ষণ করলে একজন শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা হয় না। পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করলে প্রার্থীর উত্তরপত্রের চারটি দিক দেখা হয়। এসব হলো―উত্তরপত্রের সব প্রশ্নের নম্বর সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কিনা এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কিনা। এই চারটি বিষয় পরীক্ষা করেই পুনর্নিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়। এই চার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ভুল-ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করে ফের ফল প্রকাশ করা হয়।
এবারে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন এবং ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছর ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থী ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন।