উচ্চতার বিচারে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার ক্ষুদ্রতম মা রাজশাহীর মাসুরা বেগম। তার উচ্চতা মাত্র ৩৮ ইঞ্চি (৩ ফুট ২ ইঞ্চি)। এই ক্ষুদ্র উচ্চতা নিয়েও মা হয়েছেন মাসুরা বেগম।
জানা গেছে, উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম মা ছিলেন ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার আমেরিকার স্টেসি হেরাল্ড। ২০০৬ সালে প্রথম সন্তান জন্ম দেন তিনি। তিন সন্তান জন্ম দেয়ার পর ২০১৮ সালে মারা যান স্টেসি হেরাল্ড।
ভারতের গণমাধ্যম দাবি করে থাকে, ৪১ ইঞ্চি উচ্চতার ভারতের কামাক্ষি চিকিত্সা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম উচ্চতার মা। যিনি ২০১১ সালে সফলভাবে বাচ্চা প্রসব করেন। যেখানে রাজশাহীর মাসুরা বেগমের উচ্চতা ৩৮ ইঞ্চি, যা কামাক্ষির চেয়েও তিন ইঞ্চি কম। মাসুরা সফলভাবে বাচ্চা প্রসব করেছেন ২০১৩ সালে। সেই হিসাবে মাসুরা বেগমই এশিয়ার ক্ষুদ্রতম উচ্চতার মা।
রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকায় কাজের জন্য আসেন গাইবান্ধার মনিরুল ইসলাম। তিনি ২০০৩ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন মাসুরা বেগমকে। বিয়ের প্রায় ১০ বছর পর ২০১৩ সালে মাসুরা বেগম একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। গর্ভকালীন হাজারকষ্টেও মাসুরার পাশে ছিলেন মনিরুল। গর্ভধারণের আট মাস ১০ দিন পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
মাসুরার আট বছরের কন্যা মরিয়ম ইতোমধ্যে উচ্চতায় মাকে ছাড়িয়ে ৪১ ইঞ্চি উচ্চতায় পৌঁছেঠে। মা-মেয়ের ভালোবাসাও বেশ। এই বয়সেই মাকে নানা কাজে সহযোগিতাও করে মরিয়ম। মরিয়ম এখন পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
অস্ত্রোপচারের সময় মাসুরা বেগমের চিকিত্সক ছিলেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনী বিভাগের তত্কালীন প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসিনা আক্তার ও আবাসিক সার্জন নুরে আতিয়া লাভলী। তাদের দাবি, এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম মা এই মাসুরা বেগম।
মাসুরা বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে মাসুরার সঙ্গে ঘর বেঁধে সুখে সংসার করছেন তারা। শারীরিক যোগ্যতা নয়, ভালোবাসা এবং ভালো থাকার জন্য প্রয়োজন সুন্দর মন। আর তাইতো মনিরুল ইসলাম ও মাসুরা বেগমের ভালোবাসা সবার কাছে উদাহরণ।