দেশের ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর নতুন করে আরো তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়েছে। গত বছর তিনটি গুচ্ছে ২৯ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে। গুচ্ছ তিনটি হচ্ছে- সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং কৃষি ও কৃষি প্রধান।
এবছর গুচ্ছভুক্ত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে– বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ; চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় জানানো হবে। তবে, এবছর প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন হতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এক সভায় প্রাথমিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম- এর সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৩৬ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপাচার্যগণের মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গুচ্ছের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে দ্রুত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি, ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল ও ভর্তির সময় প্রকাশ করা, কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট এর প্লেসমেন্ট, মাইগ্রেশনের সময় নির্ধারণ, ভর্তি ফি একবার প্রদানের সুপারিশ করে ইউজিসি। এছাড়া, ইউজিসি’র পক্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা ও শিক্ষার্থী ভর্তি কম হয় এমন বিভাগগুলোর আসন সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া, কোন সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে এবং ২য় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহনের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় উপাচার্যবৃন্দ গুচ্ছের বাইরে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- কে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পরামর্শ দিয়ে এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা প্রয়োজনে এ চার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলাদা গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহসী ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাইরে থাকা আট বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভারতের ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির (এনটিএ) আদলে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে অবগত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। তিনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সাবজেক্ট পছন্দ ও মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়া এবং যৌক্তিকভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফি নির্ধারণের পরামর্শ দেন।
সভায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার সফলতার মাত্রা অনেক বেশি। এবছর ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি সহজ করা হবে এবং এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান ।