The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫

এবার টিউলিপকে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার দাবি দুর্নীতিবিরোধী জোটের

ডেস্ক রিপোর্ট: ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি ও দুর্নীতবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছে দুর্নীতিবিরোধী জোট ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন। এই জোটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফামের মতো বৈশ্বিক সংগঠনগুলোও আছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর পরিবার বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ ব্রিটিশ রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে। এর আগে এই অভিযোগের আলোকে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট নেতা কেমি ব্যাডেনকও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানান টিউলিপকে বরখাস্ত করতে।

ইংল্যান্ডের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনের ৪২ বছর বয়সী এমপি টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মানদণ্ড উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমি কোনো ভুল করিনি। তবে সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে চাই, যাতে আপনি বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারেন।’

এদিকে, গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী টিউলিপের ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ রেখেছেন। এর আগেও কেয়ার স্টারমার সিদ্দিকের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি যথাযথভাবে কাজ করেছেন এবং নিজেকে স্বেচ্ছায় তদন্তের জন্য হস্তান্তর করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, স্যার লরি এখন বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং যদি প্রয়োজন হয়, পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

তবে ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন বলেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ সরকারে যে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো স্পষ্টতই ‘স্বার্থের সংঘাত’। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে। এই মামলার অন্যতম আসামি টিউলিপের খালা ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাকে গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

এই মামলা করা হয় মূলত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিরোধী ববি হাজ্জাজের অভিযোগের ভিত্তিতে। বিবিসি এই মামলার নথি দেখতে পেয়েছে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৩ সালে টিউলিপ সিদ্দিকির মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করে হাসিনা সরকার, যেখানে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বাড়িয়ে দেখানো হয়। নথি অনুসারে, এই চুক্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ব্যয় ১ বিলিয়ন পাউন্ড বাড়িয়ে দেখানো হয়। অভিযোগ আছে, এই বাড়িয়ে দেখানো অর্থের ৩০ শতাংশ টিউলিপ সিদ্দিক এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে ব্যাংক ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের এক জটিল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বণ্টন করা হয়।

মন্ত্রিসভা থেকে টিউলিপকে বরখাস্ত করার আহ্বান ব্রিটিশ বিরোধীদলীয় নেতারমন্ত্রিসভা থেকে টিউলিপকে বরখাস্ত করার আহ্বান ব্রিটিশ বিরোধীদলীয় নেতার
দুর্নীতিবিরোধী দাতব্য সংস্থাগুলোর জোট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ও যুক্তরাজ্যের সুনাম রক্ষায় সরকারের পক্ষে অনেক জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ সিদ্দিকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কারণে সৃষ্ট স্বার্থ-সংঘাতে এটি এখন স্পষ্ট নয় যে তিনি এসব সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কি না।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ট্রেজারি মন্ত্রী (টিউলিপ) যুক্তরাজ্যের মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার দায়িত্বে আছেন। অথচ তাঁর সরাসরি পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে একটি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে, যা ওই কাঠামোর অধীনে তদন্তের মুখোমুখি হতে পারে। এই স্বার্থ-সংঘাত তদন্তের ফলাফল যাই হোক না কেন, তা বহাল থাকে।’

তবে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র সিদ্দিকের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেছেন, ‘তিনি সম্পূর্ণ সঠিকভাবে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজেকে স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করেছেন। এই প্রক্রিয়া এখনো চলছে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.