সুস্থ হতে হলে তাকে বিদেশে নিতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের পাঁচ সদস্য সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গত ২৮ নভেম্বর।
তারও আগে ১৩ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে (ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন আছেন। সিসিইউ থেকে তাকে মাঝেমধ্যে কেবিনে নেওয়া হয় গোসল করানোর জন্য। এছাড়া এন্ডোসকপিসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালের অন্য জায়গায় নেওয়া হলেও শিগগিরই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
২৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসক টিমের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলনের পরে খালেদা জিয়ার শারীরীক অবস্থা নিয়ে আর কোনো সংবাদ সম্মেলন করা হয়নি। তবে, বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চিকিৎসক টিমের সদস্য প্রফেসর ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন বিচ্ছিন্নভাবে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে থাকেন।
সবশেষ সোমবার (৩ জানুয়ারি) খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের চারতলায় সিসিইউ থেকে তিনতলায় এন্ডোসকপি করতে নেওয়া হয়। এন্ডোসকপির পরে তাকে অবজারবেশন রুমে রাখা হয়। রাতেই আবার সিসিইউতে নেওয়া হয়। এর আগের দিন রোববার (২ জানুয়ারি) তাকে কেবিনে নেওয়া হয়েছিল গোসল করানোর জন্য।
একটি সূত্র জানায়, বার বার কেন রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেটা জানার জন্য সোমবার রাতে এন্ডোসকপি করা হয়। এন্ডোসকপির রিপোর্টে রক্তক্ষরণ কেন হয় সেটা জানা সম্ভব হয়েছে। এখন সেই অনুযায়ী চিকিৎসক বোর্ডের সদস্যরা চিকিৎসা দেবেন।
জানা গেছে, খালেদা জিয়া শরীর বেশ দুর্বল। তার ওজন হ্রাস পেয়েছে। খাবারের রুচি নেই বললেই চলে। শুধু স্যুপ আর তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি স্যালাইন পুশ করা হচ্ছে।
তার শারীরিক খোঁজ নিতে এবং দেখাশোনা করতে পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান শিঁথি নিয়মিত হাসপাতালে যাওয়া আসা করেন। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, একান্ত সহকারী আব্দুস সাত্তার এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রায়ই হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখে আসেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। আগের মতোই আছেন। দেশের চিকিৎসকরা তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, তার পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার জন্য এই দেশে আর চিকিৎসা নেই। তার সুস্থতার জন্য এখন একমাত্র চিকিৎসা বিদেশেই আছে। তবে সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার আবেদন করা হলেও আইনিভাবে সম্ভব নয় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ৪০১ ধারায়ই বলা আছে সরকার প্রধান চাইলে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সংবিধানই তাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে। এতে কোনো আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২২