The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

এক পা নেই তবুও দেশসেরা কৃষক শফিউল বাশার

খাগড়াছড়ির গোমতীর সফল কৃষক শফিউল বাশারের এক পা নেই। প্রবল ইচ্ছা, কঠোর পরিশ্রম আর বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বর্গা জমিতে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের সবজি খেত। সব খরচ বাদ দি‌য়ে বছরে তার লাভ হয় ৬  থেকে ৭ লাখ টাকা।

১৯৯৬ সালের কথা। এক প্রতিবেশীর ঘরের আগুন নেভাতে গিয়ে বিষাক্ত কিছু লেগে সংক্রমণ দেখা দেয় শফিউলের বাম পায়ে। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে ২০০১ সালে তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। পা কেটে ফেলে দেওয়ার পর বেকার জীবন কাটাচ্ছিলেন শফিউল।

পা কেটে ফেলার পরে পঙ্গু জীবনে কোনো উপায় না পেয়ে নিজের বুদ্ধিতে বাড়ির পাশে অন্যর কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন ২০০৩ সালে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ২০ বছর একই জমিতে চাষ করে নিজের কিছু জমিও করেছেন তিনি।

বর্তমানে তার জমিতে কাজ করে সংসার চালান অন্তত ১০ জন। এই জমি চাষ করে সব খরচ শেষে বছরে আয় করেন ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা।

গোমতির বান্দরছড়া গ্রামে অন্যের কাছ থেকে বন্ধক নেওয়া ৯ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের সবজির খেত। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অর্জন করেছেন সফল সবজি চাষির জাতীয় স্বীকৃতি। নিজের জমি না থাকলেও যে সাফল্য অর্জন করা যায়, তার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শফিউল।

স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার শফিউল বাশারের। সবজি চাষ করে পরিবারের ব্যয় মিটিয়ে তার দুই ছেলেকে বিএ পাস করিয়েছেন। ছেলেরা শিক্ষিত হয়েও সানন্দে প্রতিবন্ধী বাবার কাজে সহযোগিতা করেন। শ্রমিকের সঙ্গে কাজ করেন দুই ছেলে। ৭-৮ বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।

শফিউল বাশারের বড় ছেলে আবুল বাশার বলেন, ‘আমরা ছোট থেকে দেখছি বাবা ক্রাচে ভর করে জমিতে সবজি চাষ করেন। যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করতাম। পাশাপাশি স্কুলে পড়তাম। এখন লেখাপড়া শেষে চাকরির পেছনে না ছুটে বাবার স্বপ্ন পূরণে তার সঙ্গে কৃষিকাজে যুক্ত হয়েছি। বাবার অদম্য মনোবল আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, একজন প্রতিবন্ধী হয়েও সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছেন শফিউল বাশার, যা এলাকার মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। অনেক মানুষ তাকে দেখে সবজি চাষে আগ্রহী হয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.