একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে কলেজ পাবে আবেদনকারীরা। আগে মোবাইলে এসএমএসে আবেদনের সুযোগ থাকলেও এবার শুধুমাত্র অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। দুই মাস ভর্তি কার্যক্রম শেষে আগামী ২ মার্চ একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে।
জানা যায়, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে রোডম্যাপ তৈরি করেছে। আবেদনে শিক্ষার্থীরা সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবে। এছাড়াও ভর্তির জন্য তিন ধাপে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। আবেদনের জন্য ভর্তির ওয়েবসাইটে xiclassadmission.gov.bd পাওয়া যাবে সব তথ্য।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এবার প্রায় ২১ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছে। এতো বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত আসন আছে কি না এ নিয়েও তাদের মনে রয়েছে সংশয়। তবে কলেজ সংশ্লিষ্টরা জানান, সব শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পরও প্রায় ৫ লাখ আসন খালি থাকবে।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে জানা যায়, ৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে তাকে পুনরায় ফিসহ আবেদন করতে হবে। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন নেওয়া হবে। পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ১১-১২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে।
যারা আবেদন করতে পারবে
২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যারা এসএসসি পাস করেছে তারা আবেদন করতে পারবে। তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ২২ বছর বয়সেও আবেদন করতে পারবে। আর যেসব শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিলের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করবে তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করলেও ফল পরিবর্তনকারীরা ২২ ও ২৩ জানুয়ারি আবেদন করতে পারবে। ২৪ জানুয়ারি পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হবে। আর ২৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেও শনিবার (৮ জানুয়ারি) থেকে আবেদন নেওয়ার চিন্তা চলছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ভর্তি নীতিমালাসহ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন ও ভর্তি ফি কতো
আবেদন ও নির্বাচন পর্ব শেষে ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। এবার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। নীতিমালায় ঢাকা ও জেলা পর্যায়ে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফিসহ সব ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে পাঁচ হাজার টাকা, ঢাকা মহানগরের বাইরে তিন হাজার, জেলা পর্যায়ে দুই হাজার আর উপজেলা ও মফস্বলে এক হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে। নির্ধারিত ফির বেশি অর্থ আদায় করা যাবে না। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেশনচার্জ ও ভর্তি ফি গ্রহণ করা যাবে। উন্নয়ন ফি আদায় করা যাবে না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া হয় এমন কলেজ ও মাদরাসা আছে আট হাজার ৮৬৪টি। অন্যদিকে সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৫৫০টি। কলেজ ও মাদরাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি। পলিটেকনিকে আছে এক লাখ ৬৯ হাজার। সবমিলিয়ে এ স্তরে আসন সংখ্যা ২৬ লাখ ৯ হাজার ২৪৯টি। বিপরীত দিকে এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে মোট পাস করেছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এসএসসিতে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২১১ জন, দাখিলে দুই লাখ ৭২ হাজার ৭২২ জন আর কারিগরি শাখা থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৬১৩ জন পাস করেছে।