দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে ৫টি অভিযান ও ৪টি দপ্তরে পত্র প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন দুদক জনসংযোগ কর্মকর্তা।
অভিযান ০১: বাগেরহাট জেলা পরিষদের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে জেলা পরিষদের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি দেখিয়ে ২০ লাখ টাকার ভুয়া বিল তৈরি করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, বাগেরহাট হতে আজ একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দুদক টিম বর্ণিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ সংক্রান্ত বিভিন্ন রেকর্ডপত্র যাচাই এবং উক্ত অবকাঠামো সরেজমিন পরিদর্শন করে। বর্ণিত বিলে জেলা পরিষদের আঙ্গিনার সম্মুখস্থ ম্যুরাল ভাঙচুর, জেলা পরিষদের গেটসহ প্রাচীর ভাঙচুর, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরবাবদ আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা দেখানো হলেও অভিযানকালে জেলা পরিষদের আঙিনার সম্মুখস্থ ম্যুরালের মাথার অংশ ভাঙ্গা দেখা যায় এবং ০২ টি সিসি ক্যামেরা নষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও জেলা পরিষদের গেটের ৪ টি টাইলস পূর্বে থেকেই ভাঙ্গা ছিল মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ প্রাথমিক যাচাইয়ে টিম কর্তৃক জেলা পরিষদ, বাগেরহাট হতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বেশী দেখানো হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অভিযান ০২: কুড়িগ্রাম পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুড়িগ্রাম হতে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে টিম নিরপেক্ষ প্রকৌশলীসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রাস্তা পরিদর্শন করে এবং রাস্তার গুনগতমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নমুনা সংগ্রহ করে। রাস্তা পরিদর্শনকালে টিমের নিকট রাস্তার কাজ নিম্নমানের মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে এবং বেশ কিছু জায়গার রাস্তা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। নমুনা পরীক্ষা পরবর্তী নিরপেক্ষ প্রকৌশলী টিমের বিশেষজ্ঞ বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন এবং প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযান ০৩: শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, মাদারীপুর হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের শুরুতে ছদ্মবেশে রোগী সেজে হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের ভিডিও ধারণসহ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অতঃপর তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচালনা করে টিকিট বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বেশ কিছু অনিয়মের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও পরিদর্শনকালে উক্ত হাসপাতালে মেডিসিন স্টোর রুমে রেজিস্ট্রার অনুযায়ী ওষুধের ঘাটতি, দরপত্র অনুযায়ী রোগীদের মানসম্মত ও পরিমাণ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ না করা, মেডিসিন আউটডোরে স্টোর রেজিস্ট্রার হালনাগাদ না রাখার সুযোগে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, শরীয়তপুর -এর সুপারিন্টেন্ডেন্ট অভিযানে উদ্ঘাটিত তথ্যের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন মর্মে দুদক টিমকে অবহিত করেন।
অভিযান ০৪: বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলা খাদ্য অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকদের নামের ভুয়া তালিকা তৈরি করে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে ধান ক্রয় করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, বগুড়া হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। টিম প্রথমে সোনাতলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে অভিযোগ বিষয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে টিম সোনাতলা উপজেলার ২টি লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) পরিদর্শনপূর্বক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে অভিযোগের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও তথ্যাবলি পর্যালোচনা করে টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযান ০৫: রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুর থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে টিম ছদ্মবেশে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ ও সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। অভিযানকালে ডায়েট তালিকা অনুসারে খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম, বহিঃবিভাগে ঔষধ বিতরণে অনিয়ম, এ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার তথ্যর অসঙ্গতি খুজে পায় দুদক টিম। অভিযোগের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রদান করবে।