এই বুঝি শীত এলো ক্যাম্পাসে
হেদায়েতুল ইসলাম নাবিদ, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য লীলাভূমিখ্যাত লালমাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ঋতু পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাস প্রকৃতিও সাজে ভিন্নরূপে। শরতের শেষ বিকালে পাতাঝরা হেমন্ত করা নাড়ছে ক্যাম্পাস প্রকৃতিতে। হেমন্তের মিষ্টি বিকেলে কুয়াশার চাদর জড়িয়ে ক্যাম্পাস জমিনে নেমেছে হাড়কাঁপানো শীত। অন্যান্য ঋতুর মতো কুবি ক্যাম্পাসে শীতঋতু এসেছে উৎসবের আমেজে। প্রকৃতিও সেজেছে নিজস্ব স্বকীয়তায়।
দূর্বা ঘাসে কিংবা গাছের সদ্য প্রস্ফুটিত পাতায় মুক্তোর মতো আলো ছড়িয়ে ভোরের শিশির জানান দিচ্ছে শীত আসছে। ঘন কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব দিগন্তে সূর্যের উদয়। অন্যান্য স্থানের মতো কুবি ক্যাম্পাসেও শীতের ঘনঘটা শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসের দিগন্তজোড়া মাঠ, পিচঢালা পথ ও পাহাড়ের টিলার উপর অবস্থিত ভবনগুলোতো শীতের আমেজ বিরাজ করছে। ভোর সকালে ক্যাম্পাস অঙ্গনে পড়তে শুরু করেছে হালকা কুয়াশা। সেই সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু ঠান্ডা। প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষার ঘনঘটা শেষ করে কার্তিকের কোলজুড়ে শীতের আগমন ঘটেছে। শীত যেন ক্যাম্পাস প্রকৃতিতে আনে ভিন্নমাত্রা।
কুবি ক্যাম্পাসের শীত উপভোগ্য আর রূপময়। শিশির ভেজা লাল পাহাড়ের শরীর বেয়ে নামে স্নিগ্ধ সকাল। হেমন্তের সকালে ক্যাম্পাসের এমন মায়াবী প্রকৃতি দেখতে বেরিয়ে পড়েন অনেকেই। শিশির ভেজা কুয়াশা জড়ানো শহীদ মিনারের রাস্তায় চলে অনেকের প্রাতঃভ্রমণ, শরীরচর্চা ও সাইক্লিং। ক্যাম্পাস গেট পেরিয়ে গোলচত্বর, মুক্তমঞ্চ সবকিছুই প্রকৃতিপ্রেমীদের ডেকে নিয়ে আসে স্নিগ্ধ সকালে শীতের রূপ-রস আস্বাদনে।
“ঋতুর পরিক্রমায় ইতোমধ্যে শীতকাল শুরু হয়েছে।শীতের আগমনী বার্তা প্রতিটি সন্ধ্যার আবছা শীতল হাওয়া জানান দিচ্ছে। আমার ক্যাম্পাস কুবিতে এই আগমনী বার্তার প্রকোপ টা একটু বেশিই। কারন, ক্লাস শেষে যখন বিকালে পড়ন্ত মাঠে দাঁড়াই তখনই বহমান হাওয়া মগজ পর্যন্ত বয়ে যায়। রাত ৮ টার পর কৃষ্ণচূড়া রোড, মুক্তমঞ্চের সামনে তো আবছা কুয়াশা পড়া শুরু হয়ে গেছে। শীতকাল যদি কারো ভালো লেগে থাকে, তাহলে আমার ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম উদযাপনের জায়গা বলা যায়। কিছুদিন পর এখানে গরম কাপড় ছাড়া কেউ বের হতে পারবে না। উষ্ণতার খোঁজে প্রত্যেকটি চায়ের টং এ জমবে ভরপুর আড্ডা।” কথাগুলো এইভাবে বলেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী একা তালুকদার।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগতভানে আমার শীতকাল মানে ডিসেম্বর উদযাপন থেকে নস্টালজিয়ার মাস বলে মনে হয়।এই মাসে স্কুলের ছুটির দিনের কথা,কাঁথা মুড়ে গল্পের বই পড়ার কথা বা সন্ধ্যা বেলে গরম গরম জিলাপি খাওয়ার কথা মনে পড়ে। স্মৃতি উদযাপন- ই আমার শীত উদযাপনের অন্যতম উপায়। ওইসব দিনগুলি হয়তো ফিরে পাব না। তবে মনে হয়, এইসব দিন, এই ক্যাম্পাসের দিন একদিন ভবিষ্যৎ দিনের জন্য স্মৃতি হয়ে থাকবে। হয়তো সামনের দিনে ক্যাম্পাসের এই অদ্ভুত রহস্যময় শীতের দিনলিপি নিয়ে স্মৃতি উদযাপন করব!
গনিত বিভাগের শিক্ষার্থী শামসের তাবরিজ চৌধুরী বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস গাছগাছালি ও পাহাড় বেষ্টিত হওয়ায় এইখানে তুলনামূলক শীত বেশি। শীত ক্যাম্পাসে আমেজ নিয়ে আসে। এসময় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়। শীত ঋতু সবসময় উপভোগ্য আমার জন্য।