ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) বিকাল ৪টায় ভিসি বাংলোয় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান।
বহিষ্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।
অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ফুলপরী বলেন, এই বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায় বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠ এবং সর্বোচ্চ বিচার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করেছে। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেনো শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে না অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে না হয়। এরকম কঠোর বিচার হলে ভবিষ্যতে আর কেউ সাহস পাবেনা। শুধু র্যাগিংই না এর সাথে অন্য কোনো শারীরিক মানসিক জুলুমের মতো আর কোনো ঘটনা ঘটবেনা। এরকম সঠিক বিচার হলে ক্যাম্পাসে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়া শুনা শেষ করে বের হতে পারবে।
ফুলপরী আরো বলেন, আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। কোনো রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিনা। খুব বেশী প্রয়োজন না হলে আমি হল থেকে বের হইনা।
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় নবীন ছাত্রী ফুলপরি খাতুন রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ করা হয় বহিষ্কৃতদের বিরুদ্ধে। এতে ৪ টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। প্রতিটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা মিলে এবং এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট হয়। এরপর তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার কেন করা হবেনা এ ব্যাপারে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর গত ১২ জুন ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে মৌখিক বক্তব্য দিতে ক্যাম্পাসে আসেন সাময়িক বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী। কমিটির কাছে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার পরও কোন বক্তব্য থাকলে তা জানতে এই বক্তব্য গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এসময় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।