মেহরাব হোসেন, ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.শুচিতা শরমিন। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরের উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। তাদের প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপাচার্যও বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নিবেন। নতুন উপাচার্যকে নিয়ে এমন প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের কথা তুলে ধরেছেন ববি প্রতিনিধি।
সংকটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চাই
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীরা নতুন আশার আলো দেখছি । সেই সাথে নবনিযুক্ত উপাচার্যের অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আস্থা রেখে বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়নের বেশ কিছু প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে । এর মধ্যে উপাচার্যের কাছে আমার প্রত্যাশা হলো “একটি সংকটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়”। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সংকটগুলো অতিদ্রুত নিরসন করা খুবই জরুরী। আমাদেরকে প্রতিনিয়ত শ্রেণিকক্ষের সংকটে পড়তে হয়। বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টেই মাত্র একটা শ্রেণিকক্ষ রয়েছে । এছাড়াও পর্যাপ্ত আবাসন , লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই, গবেষণাক্ষেত্র, সহশিক্ষা কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি সংকটে জর্জরিত হয়ে আছি আমরা । যা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনোভাবেই কাম্য নয় । তাই উপাচার্যের কাছে আমার প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি অতিসত্বর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে সংকটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা ।
ফাতেমা তুজ জোহরা মাইসা, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ, বাংলা বিভাগ।
গবেষণাধর্মী ক্যাম্পাস চাই
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্যের কাছে আমরা দায়িত্বশীল, প্রগতিশীল এবং শিক্ষার্থীবান্ধব নেতৃত্বের প্রত্যাশা করি। ক্লাস সংকট ও সেশন জট সমস্যাগুলি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সময় নষ্ট না করে নিয়মিত ক্লাস নিশ্চিত করা তার প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। পাশাপাশি, অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং ক্যাম্পাসের প্রযুক্তিগত সুবিধাসমূহ বাড়ানোও প্রয়োজন। গবেষণা ও উদ্ভাবনের পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক প্রশাসনিক কার্যক্রমকে গতিশীল ও স্বচ্ছ করার আহ্বান জানাই। আমরা আশা করি, নতুন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাবেন।
তাসফিয়া জিদনি, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ, দর্শন বিভাগ।
একটি সমাবর্তন চাই
দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠে পড়ার সুযোগ পেয়ে যখনই আমি এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করি তখনই এর সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেছে অনেক কিছুই। বিশেষ করে নতুন কিছু ছাত্র সংগঠন ভালো ভালো উদ্যোগ নিচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা। আমার দেখা এক যুগের বেশি সময় ধরেও এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হয়নি কোনো সমাবর্তন, জব ফেয়ার এবং উন্নত হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাবের যন্ত্রপাতি। গত ১০-১২ বছর ধরে একই মরিচা ধরা যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করে আসছে ছাত্রছাত্রীরা। আমাদের সবার আকুল আবেদন একটি সমাবর্তন এবং সার্বিক সব বিষয়ের আশু উন্নয়ন।
মাসুদ রানা, মার্কেটিং বিভাগ।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন চাই
নতুন উপাচার্যের কাছে আমাদের প্রত্যাশা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উন্নত শিক্ষার পরিবেশ, সুশাসন, এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে। শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, গবেষণার সুযোগ সম্প্রসারণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবে বলে আমরা আশা করি। এছাড়াও শিক্ষার্থীবান্ধব নীতি গ্রহণের আশা আমাদের ।