The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচয়

ডেস্ক রিপোর্ট: অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হতে যাচ্ছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নতুন করে যারা উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নতুন উপদেষ্টাদের শপথ হওয়ার কথা রয়েছে। এই চারজনের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিতে আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ফারুকী ছাড়া অন্য তিনজনের মধ্যে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিন ও ড. সাইদুর রহমান।

এখন প্রশ্ন হলো কে এই ফারুকী-

বাংলাদেশি সিনেজগতে ফারুকী যেন নতুন এক ফিলোসফার। একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও নাট্যনির্মাতা তিনি। নিজস্ব ঢঙে নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণের তাগিদে তৈরি করেছেন ‘ছবিয়াল’ নামে একটি সংগঠন। ভিন্ন ধারার সিনেমার সঙ্গে দেশের মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলেছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিজের চিহ্ন রেখেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।

১৯৭৩ সালের ২ মে ঢাকার নাখালপাড়ায় জন্ম মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর। তার বাবার নাম আবদুর রব, মা কুলসুম বেগম। ২০১০ সালে বিয়ে করেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে। ইলহাম নুসরাত ফারুকী নামে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাদের।

১৯৯৯ সালে মিডিয়ায় পথচলা শুরু করেন ফারুকী। ছোট পর্দায় অসাধারণ কিছু টেলিফিল্ম ও সিরিয়াল নির্মাণ করেছেন তিনি। ‘স্পার্টাকাস ৭১’, ‘চড়ুইভাতি’, ‘কানামাছি’ ও ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’র মতো নন্দিত টেলিফিল্ম তৈরি করেছেন ফারুকী। পাশাপাশি ‘একান্নবর্তী’, ‘সিক্সটিনাইন’ ও ‘৪২০’ তার নির্মিত জনপ্রিয় কিছু সিরিয়াল। আনিসুল হকের ‘আয়েশামঙ্গল’ অবলম্বনে ফারুকী নির্মিত ‘আয়েশা’ নাটকটিও পেয়েছে দর্শকপ্রিয়তা।

সিনেমায় ফারুকীর সূচনা ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। গল্পের গাঁথুনি, নিজের প্রজ্ঞা ও মুনশিয়ানার মিশেলে সামাজিক সম্পর্কগুলোর অসংগতি নিপুণভাবে সেলুলয়েডের ফিতায় ফুটিয়ে তোলেন এই নির্মাতা। তার তৈরি সিনেমার সংলাপ থেকে শুরু করে গান—সবই হয়ে ওঠে তরুণদের ক্রেজ।

ব্যাপক সাড়া জাগায় তার নির্মিত ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ সিনেমাটিও। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া তার এই ছবি ‘পুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’, ‘রোটেরডেম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’, ‘ফ্রাইবুর্গ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ ও ‘আবুধাবি চলচ্চিত্র উৎসব’-এ অফিসিয়াল সিলেকশনে ছিল।

এ ছাড়া ২০১০ সালে ‘টিবুরন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’, ‘জোগজা-নেপটেক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ গোল্ডেন হ্যানোমেন অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত হয় সিনেমাটি। ২০১৪ সালে ‘কেস উইক চলচ্চিত্র উৎসবে’ প্রদর্শনীর পাশাপাশি ৮৩তম অস্কারে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ফারুকী নির্মিত এই সিনেমা। ২০১২ সালে ‘টেলিভিশন’, ২০১৩ সালে ‘পিঁপড়াবিদ্যা‘ এবং ২০১৭ সালে ‘ডুব’ সিনেমা নির্মাণ করে নিজের জাত চেনান ফারুকী। ২০১৪ সালে ‘বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে’ সমাপনী ছবি হিসেবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় ‘টেলিভিশন‘ সিনেমার।

বুসানে ‘এশিয়ান সিনেমা ফান্ড ফর স্ক্রিপ্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পোস্ট-প্রোডাকশন’-এর পুরস্কার জিতে নেয় তার নির্মিত সিনেমা টেলিভিশন। এমনকি ৮৬তম অস্কারেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ‘ ছবিতে ফারুকী দেখিয়েছেন দুর্দান্ত পলিটিক্যাল স্যাটায়ার। ২০০৮ সালে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে‘ সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় এই সিনেমা।

নাটক-সিনেমার পাশাপাশি লেখালেখিও করেন ফারুকী। ‘রাফকাট’ নামে একটি বই রয়েছে তার। মাঝেমধ্যে লেখেন কবিতাও।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.