জাবি প্রতিনিধি : গবেষক ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নত করতে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের বিকল্প নেই। এতে সবাই শিক্ষার আলোয় আসবে।
সোমবার(২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) জহির রায়হান মিলনায়তনে ‘গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার রূপরেখা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন৷ এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশী ভাষা শেখাটা আমাদের জন্য এখন প্রায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু বিদেশী ভাষার মাধ্যমেই কেন শিক্ষার্থীদের পড়াতে হবে? আমাদের ভাষাকে উন্নত করার একটি কর্মসূচি গত পঞ্চাশ বছরেও আমরা কি নিতে পারিনি? তাহলে আগামী পঞ্চাশ বছরে আমরা কি করবো? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কি পড়ানো হয়, যা মাতৃভাষায় পড়ানো যাবে না? অর্থ্যাৎ, একটা জাতি যখন তার শিক্ষার্থীদের কোন ভাষায় শিক্ষা দিবে, তা স্থির করতে পারে না তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি পড়াবে?।
সভায় তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রধান দুটি সমস্যা তুলে ধরে বলেন, আমাদের শিক্ষার প্রধান দুটি সমস্যা হলো শিক্ষা সার্বজনীন ও আনন্দদায়ক নয়৷ যা প্রাচীনকাল থেকেই আমরা জেনে আসছি৷ শিক্ষা আনন্দদায়ক করে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষাকে গণতান্ত্রিক ও সমতা ভিত্তিক করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয় নির্বাচনও গণতান্ত্রিক করতে হবে৷ সেই সুযোগ দিলে শিক্ষা আনন্দদায়ক হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দেশের উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষার প্রবর্তনের কথা আলোচনায় আসলেও বর্তমানে তা নেই বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে আমরা এখন ইংরেজি শিক্ষাকেন্দ্রিক করেছি। তবে ইংরেজি শিক্ষার বিরোধীতা আমি কখনো করি না৷ ইংরেজরা আমাদের জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষার যে গ্রাউন্ড সিস্টেম তৈরি করে দিয়েছিল, তা আজও চলছে৷ কিন্তু ব্রিটিশরা যাওয়ার পর আমরা তাদের রেখে যাওয়া এই প্রথা তেমন কোনো পরিবর্তন করিনি৷ বরং আশ্চর্যের বিষয় হলো বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষা প্রবর্তন নিয়ে একাধিক সেমিনার হয়েছিল৷ কিন্তু এখন আর তা আলোচনার বিষয়ে নেই। এখন কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে সবকিছু ইংরেজি কেন্দ্রিক করা হচ্ছে।’