The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

উত্যক্তের অভিযোগ তোলায়, ববি শিক্ষার্থীর জীবন শেষ করে ফেলার হুমকি

ববি প্রতিনিধিঃ মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাবেক শিক্ষার্থী শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে।

গত ২৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) অর্থনীতির বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৈয়দা নাবিলা হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর এই বিষয়ে অভিযোগ করেন।

অভিযোগের পর থেকে এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে অভিযুক্ত শফিক মুন্সি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা নাবিলা হাসান এই প্রতিবেদককে জানান, অনেকদিন ধরে শফিকুর রহমান (শফিক মুন্সী) আমাকে বিরক্ত করে আসছে। মানসিকভাবে টর্চার করছে। আমি অনেক চেস্টা করে তাকে ফেরাতে না পেরে বাধ্য হয়ে আমার নিরাপত্তার জন্য শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দেই।

কিন্তু এই অভিযোগই যেন এখন আমার জন্য কাল হয়ে গেছে। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য শফিক মুন্সি আমাকে শিক্ষক, রাজনীতিবীদসহ বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে এবং পরিবারকে প্রেশারাইজড করা হচ্ছে। নানা লোকজনকে দিয়ে আমাকে ফোন করে বলা হচ্ছে আমার জীবন শেষ করে ফেলবে অভিযোগ না তুললে। আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এর বিচার চাই।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, পড়াশোনা দুই বছর আগে শেষ হলেও শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করছেন। তিনি বিভিন্নভাবে অস্ত্র দেখিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে থাকেন, অবৈধভাবে বিভিন্ন কাজ করতে বলেন, তার কথা না শুনলে তিনি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সম্মানহানি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্বারা হেনস্তা করার হুমকি দেন শিক্ষার্থীদের। তিনি সকলের কাছে দাবি করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার কথায় চলে এবং তার কারণেই সকলে এই অবস্থানে আছেন।

আরও উল্লেখ করা হয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার কারণে ইতিমধ্যে ২ বার তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই শিক্ষার্থী। ২ বারই তিনি মুচলেকা প্রদান করেন। আর কিছুদিন যাবত তিনি আমাকেও মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর ভয় দেখিয়ে তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন এর জন্য চাপ দিচ্ছেন। আমি আমার নিজ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভুক্তোভোগী নাবিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে উক্ত ঘটনা উল্লেখ করে পোস্ট করে লিখেন, ‘ছোট বোন হিসেবে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে পাশে চাই। এই মুখোশধারী ভদ্রবেশী লোকটার বিচার চাই।’

শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি আঞ্চলিক একটি পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পড়াশোনা শেষ হলেও শফিক মুন্সি শেরে বাংলা হলের ৪০২১ নং রুম দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একাংশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে এমন কর্মকাণ্ডে চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে তার সাথে শলাপরামর্শ করতেও দেখা যায়।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আবদুল কাইউম বলেন, অভিযোগ তদন্তে শিক্ষার্থীদ্বয়ের প্রত্যেক বিভাগে বিভাগে অভিযোগটি পাঠিয়ে দিয়েছি৷ বিভাগ থেকে অল্পদিনের মধ্যে প্রতিবেদন আসবে৷ শফিক মুন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী না হয়েও হলে অবস্থান করা প্রশ্নে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে কঠিনভাবে নির্দেশনা রয়েছে সে হলে থাকতে পারবে না, এমনকি ক্যাম্পাসেও নয়। এই বিষয়ে নিউজ না করার পরামর্শ দেন এই প্রতিবদককে।

বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শফিক মুন্সি বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ভুয়া। ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এটাও বানোয়াট তবে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আশেপাশে তাকে লোক নিয়ে দাড়াতে দেখা যায় এমন একটি ছবি এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদউত্তর দিতে পারেননি।

শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার পরও হলে সিট দখল করার অভিযোগে তিনি বলেন, ৪০২১ নং রুমে যার সিট দখল করে থাকি সে অভিযোগ করবে কিন্তু এ অভিযোগ তো সে (মেয়ে) করার এখতিয়ার রাখে না।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.