সাঈদ মঈন, সরকারী বাঙলা কলেজঃ দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল, একাধিকবার ভর্তি পরিক্ষায় অংশগ্রহণসহ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নানা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে যে কোনো বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হতে পারে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় একাধিকবার অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
দেশের উচ্চশিক্ষার তদারক এ সংস্থা উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে নিজেদের ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে মোট ১৭টি সুপারিশ করেছে। কমিশনের এই বার্ষিক প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ইউজিসি’র সুপারিশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা যেতে পারে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় একাধিকবার অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা যেতে পারে। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর যে কোনো সময় যেনো ভর্তির সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তির পর বিষয় পরিবর্তন করার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং যোগ্য জনবল নিয়োগের উদ্দেশ্যে একটি স্বতন্ত্র নিয়োগ কমিশন গঠন করার প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে সুপারিশে।
প্রতিবেদনে ইউজিসি আরও বলছে, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা বা বিচারিক ক্ষমতা নেই ইউজিসি’র। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম, অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি, সনদ বাণিজ্য, আর্থিক অনিয়ম ইত্যাদি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা ইউজিসি’র থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছে সংস্থাটি।
এছাড়াও গুণগত এবং মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভ্যন্তরীণ র্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করেছে ইউজিসি।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। একই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের নৈতিক অধঃপতন ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যুক্ত করার ব্যাপারে সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। সনদ জালিয়াতি প্রতিরোধে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করার প্রস্তাব করেছে ইউজিসি।
উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি’র সুপারিশে বলা হয়েছে, দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের উপাচার্য হিসেবে ইউজিসি’র মাধ্যমে নিয়োগ দিতে পারে সরকার।
ইউজিসি’র এসব সুপারিশ অনুমোদিত হলে আমূল পরিবর্তন আসবে দেশের উচ্চশিক্ষা-ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতা শিথিলের পাশাপাশি সময়ের বাধ্যবাধকতাও শিথিল হবে।