The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পরে ঈদুল ফিতরের আগমন ঘটে। ধনী গরিব নির্বিশেষে সবাই মিলে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় শেষে মোলাকাত সকল ভেদাভেদ দূর করে। এই ঈদ আনন্দ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন ক্যাম্পাস সাংবাদিক ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদমান রাকিন।

ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে

ঈদুল ফিতর হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পরে ঈদুল ফিতর নিয়ে আসে উৎসব আর আনন্দের বন্যা। পড়ালেখা কিংবা পেশাগত কারণে দূরদূরান্তে অবস্থান করা সবাই পরিবারের কাছে ছুটে আসে শেকড়ের টানে, ভাগাভাগি করে নেয় ঈদ আনন্দ। গ্রামে যাওয়া ছাড়া ঈদ আনন্দ যেন অপূর্ণ থেকে যায়। ঈদ উপলক্ষে আত্মীয় স্বজনরা বেড়াতে আসে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এক অন্যরকম আনন্দ বিরাজমান থাকে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ তার নিজস্ব আঙ্গিকে এই ঈদ উৎসব উদযাপন করে থাকে। শ্রেণিবৈষম্য পরিহার করে ঈদের নামাজ শেষে প্রতিটি মুসলমানের কোলাকুলির দৃশ্য পৃথিবীর একটি অন্যতম সুন্দর দৃশ্য। এই দিনে ধনী গরিব সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে। ধর্ম বর্ণ, ধনী গরিব নির্বিশেষে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক ঈদের আনন্দ আর বিকশিত হোক ভ্রাতৃত্ব বোধ।

আজহারুল হক মিজান, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদ বরাবরই আনন্দের

ঈদ বরাবরই আমার প্রিয় একটা অনুভুতি। ছোটবেলায় ঈদের আমেজ অন্য রকম ছিলো- ঈদ‌ কার্ড বিতরণ, ঈদের শপিং, চাঁদ রাতে মেহেদী দেয়া, ঈদের দিনের সালামি,‌ সুস্বাদু খাবার, আত্নীয়দের বাসায় ঘুরতে যাওয়া আরও কত কি ! গত পাঁচ বছর ঘরের বাইরে, খুব বেশিদিনের বন্ধ না দিলে সাধারণত বাসায় যাওয়া হয়ে উঠে না। তাই এখন যত বড় হচ্ছি, মনে হচ্ছে পরিবারের সাথে কাটানো প্রতিদিন যেন ঈদের দিন। দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একদম ১৫-১৭ রোজা পর্যন্ত খোলা থাকে- এই যে প্রতিটি দিন নিজ থেকে ইফতার, সেহেরির ব্যবস্থা করা যেন একটা বিশাল যুদ্ধ। তাই আমার কাছে আসলে ছোটবেলার চেয়ে এখন ঈদ বেশি স্পেশাল। ছোটবেলার ঈদ যেমন অন্যরকম ছিল, এখন ঈদ অন্যরকম। কিন্তু ঈদ বরাবরই আনন্দের,‌ শান্তির এবং স্বাচ্ছন্দ্যের।

হানিয়া বিনতে আসলাম, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আত্মীয় স্বজনদের সাথে কাটানো ঈদ সবচেয়ে আনন্দের

সুদীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ প্রতিটি মুসলমানের ঘরে নিয়ে আসে আনন্দের সওগাত।সারাবছরের ব্যস্ততা শেষে পরিবারের সাথে একসাথে ঈদের আনন্দ উদযাপন করা সত্যিই অনেক আনন্দের। বিশ্ববিদ্যালয়ে সারাবছর ক্লাস টেস্ট,এসাইনমেন্ট, সেমিস্টার ফাইনাল, টিউশন এসব নিয়ে আমরা অনেক ব্যস্ত থাকি। ঈদুল ফিতরের সময় হল ছেড়ে বাড়ি যাওয়া,পরিবারের সাথে ঈদের কেনাকাটা, একসাথে ঈদ আনন্দ উদযাপন করা আমাদের কাছে অন্যরকম অনুভূতি দেয়।পরিবারের সাথে একসাথে ঈদ করার মতো আনন্দ আমার মনে হয় আর কিছুই হতে পারেনা। এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন বিশ্বিবদ্যালয়ে,কলেজে পড়ুয়া বন্ধ-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সবার সাথে ঈদ উপলক্ষে দেখা-সাক্ষাৎ হয়, সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়।সত্যি বলতে আমি পরিবার আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে প্রতিবছর-ই ঈদ কাটাই,এর চেয়ে আনন্দ আর কিছুই হতে পারেনা।

তামজিদ হোসেন, শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

সবার ঈদ ভালো কাটুক

ঈদ,মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। বাইরে থাকার সুবাদে বছরে ৪ বার বাড়ি যাওয়া হয়। দুই ঈদে,পূজায় আর শীতের বন্ধে। সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয় রোজার ঈদে। রোজার প্রথম দিন থেকে দিন গণনা শুরু হয়, কবে বাড়ি যাবো। ফ্যামিলির সাথে ইফতার করবো,ঈদ করবো। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ছোট বেলা বাবা মা ঈদে নতুন জামা কিনে দিতো,এখন তাদের জন্য ঈদ উপহার কিনে নিয়ে গেলে আলাদা প্রশান্তি কাজ করে। এছাড়াও বাইরে থাকার কারণে পরিবার ও আত্মীয় স্বজন সবার সাথে একসাথে হওয়ার সুযোগ হয় না,রোজার পরবর্তী ঈদটাতেই সবার সাথে দেখা হয়, যেমন নানু-দাদু,মামা- খালা-ফুফু। এছাড়াও কাজিনরা সব একসাথে হলে আনন্দের শেষ থাকেনা। ছোট বেলায় নামাজ পড়ে সবার থেকে সালামি নেয়ার যেই রেওয়াজ ছিল, বড় হওয়ার সাথে সাথে এখন আর নিতে নয়,ছোট ভাইবোনদের সালামি দেয়ার মধ্যেই আনন্দ কাজ করে। পুরাতন সব বন্ধুদের সাথে মন খুলে আড্ডা, ঘুরাঘুরি কোনোটার কমতি হয়না। তাছাড়া মায়ের হাতের রান্নার কথা না বললেই নয়। সব মিলিয়ে এইদিনগুলি জন্যই এই ঈদটা আমার কাছে স্পেশাল। সবার ঈদ ভালো কাটুক এই প্রত্যাশা করি।

তানজিম সৌরভ, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করাতেই আনন্দের স্বার্থকতা

নিজ বিভাগের বড় ভাইদের কাছে সালামি চাওয়া আর জুনিয়রদেরকে ০.০০১bdt (bkash)সালামি দেওয়ার মাধ্যমে প্রধানত ঈদের অনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ক্যাম্পাসে। তারপর আসে প্রতীক্ষার শেষ হবার পালা। হলে, মেসে অখাদ্য আর কুখাদ্যের পর্ব শেষে এই যেনো অমৃতের স্বাদে ডুব দেয়া। সাথে যুগের সাথে তাল মেলাতে ফ্যান ফলোয়ারদের সাথে সেলফি তোলা আরেকটু বাড়তি সংযোজন। যাই হোক ঈদের খুশি যাতে দেশের সব আনাচে কানাচে সব জায়গায় পৌঁছে সেই দায়িত্বটাও কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। তাই আমাদের দ্বারা ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক দেশের সব সুবিধা বঞ্চিতদের কাছে।আমরা আমাদের সাধ্যমতো বাড়ির আশেপাশের গরিবদের মাঝে গিফট প্রদানের মাধ্যমে সবাই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারি।তাহলেই আমাদের ঈদের আনন্দ স্বার্থক হবে। ঈদ মোবারক।

আরাফাত উদ্দিন খান শিফাত, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদ আনন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্যস্থান পূরণ করে

ঈদ শব্দটা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর জীবনে সবচেয়ে প্রিয় শব্দ হওয়ার দাবি রাখে। পুরো বছর জুড়ে একটানা ফাইনাল এক্সাম,ক্লাস টেস্ট, কুইজ,  মিড, এসাইনমেন্ট, টিউশনি, সাংগঠনিক কার্যক্রম, সিনিয়র-জুনিয়রের জন্য বাড়তি সময়, হলের কার্যক্রম সম্পর্কিত কাজ করতেই তো শিক্ষার্থীদের হাপিত্যেশ উঠে যায়। বাড়ি যাওয়ার আর সময় কই? অন্যান্য সময়ে স্বল্প সময়ের ছুটি পেলেও বাড়ি থেকে ভার্সিটির দূরত্বের কথা চিন্তা করলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মনের টানকে উপেক্ষা করে। ব্যতিক্রম এখানে ঈদের দীর্ঘ ছুটি৷ বাড়িতে একসাথে ইফতার, ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ঈদের নামাজ, ঈদের ঘোরাঘুরি সবমিলিয়ে স্বপ্নের মতো সময়গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্যস্থানগুলো পূরণ করে দেয়৷ সবার ঈদ ভালো কাটুক।

মীর নিশাত রহমান, শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদের আনন্দ যেন স্বর্গীয় অনুভূতি

আমি ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স ও ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ৪র্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমি আমার পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব হতে দূরে অবস্থান করতে হচ্ছে। পুরো সেমিস্টার-ব্যাপী কুইজ, প্রেজেন্টেশন, এসাইনমেন্ট, মিড এক্সাম এগুলো থেকে মুক্ত হয়ে যখন আপন নীড়ের উদ্দেশ্য রওনা হই তখন মনের মধ্যে “স্বপ্ন বাড়ি যাবে আমার” গানটি বাজতে থাকে এবং একাডেমিক ব্যস্ততা ছাঁপিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর পরিবারকে কাছে পাওয়া, পুরোনো স্কুল-বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া, রমজানের শেষের দিকে স্কুল-ব্যাচমেটদের নিয়ে ইফতার পার্টি , ঈদের শপিং, ঈদের নামাজ,সালামী, আত্নীয়দের বাসায় যাওয়া-আসা সব যেন স্বর্গীয় অনুভূতি।

মো. সাইফুল হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়।

সবাই মিলে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করি

ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই পরিবারের সাথে এক টেবিলে বসে মায়ের হাতের হরেক রকমের অমৃত রান্না খাওয়া।ঈদ মানেই আত্নীয় স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া।ঈদ মানেই প্রতিবেশিদের খোজ খবর নেয়া।ঈদ মানেই স্কুল-কলেজ বন্ধুদের দীর্ঘদিন পর আড্ডা দেয়া।সর্বোপরি ঈদ মানেই সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা। ঈদ আমাদের দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার প্রতিযোগিতায় এক স্বর্গীয় প্রশান্তি এনে দেয়।তবে ঈদ আরো স্বার্থক হবে যখন সমাজে ধনী গরীবের পার্থক্য থাকবে না,সবাই সমান ভাগে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারবো। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন আমরা রমজানের শিক্ষাটাকে ধারণ করতে পারবো বুকে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের ঈদ আনন্দটা সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। যা আমাদেরকে আত্নকেন্দ্রীক করে ফেলছে। সেই জগৎ থেকে বেরিয়ে সবার সাথে মিলে মিশে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার আহবান রইলো সবার কাছে। নয়তো পরবর্তী প্রজন্ম এই ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে।
সবার ঈদ ভালো কাটুক,সুন্দর কাটুক।ঈদ মোবারক।

কামরুল হাসান রনি, শিক্ষার্থী, সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.