পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সুপারিশে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। আজ রোববার আকস্মিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রেসিডেন্টকে তিনি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেন। খবর জিও নিউজ ও ডনের।
‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব জাতীয় পরিষদের (পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ) ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি নাকচ করে দেওয়ার পরপরই দেশটিতে বড় ধরনের এই রাজনৈতিক পরিবর্তন আসলো।
জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়ে একটি দাপ্তরিক নোটিশ জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার পরপরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিতে তিনি প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে পরামর্শ দিয়েছেন। পরবর্তী নির্বাচনের জন্য জনগণের প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন।
জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহবাজ গিল। এক টুইটে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ফররুখ হাবিব বলেছেন, ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, ‘নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে কোনো দুর্নীতিবাজ শক্তি তা ঠিক করে দিতে পারে না। যখন অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়া হবে, তখন পরবর্তী নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ হওয়ায় ইমরান খান জাতিকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন’ ডেপুটি স্পিকার।
এদিকে অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বলে ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এর আগে অনাস্থা ভোটে জয়ী হওয়ার আত্মবিশ্বাস নিয়েই অধিবশনে অংশ নেন বিরোধী আইনপ্রণেতারা। অনাস্থা ভোটে ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে ১৭২ ভোট প্রয়োজন ছিল বিরোধীদের। পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল–এন) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনাস্থা প্রস্তাবে ১৭৪ আইনপ্রণেতার সমর্থন ছিল।
গত ৮ মার্চ অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরান খানের জোট সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। একপর্যায়ে ইমরান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টে (এমকিউএম) বিরোধী শিবিরে যোগ দিলে জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় সরকার। অনাস্থা ভোটে ইমরানের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর বিষয়টি কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে শেষটা হলো আরও নাটকীয়।