ইবি সংবাদদাতা: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) তিনতলা বিশিষ্ট সুসজ্জিত চিকিৎসা কেন্দ্র থাকলেও মিলছেনা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের চিকিৎসাসেবার জন্য স্থাপন করা হয়েছে এই আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্রটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর সেবা দিতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ১০ জন। যার সংখ্যা বহু বছর যাবত অভিন্ন। এদিকে ওষুধ সংকট ও রাতের বেলা চিকিৎসাসেবা না পাওয়া সহ নানা বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, চিকিৎসা কেন্দ্রটি সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকলেও পাওয়া যায় না কাঙ্খিত মানের সেবা। অপ্রতুল চিকিৎসক, ওষুধের সংকট, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না থাকা, কর্মকর্তাদের অসৌজন্যমূলক আচরনসহ নানা অভিযোগে জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রটি। অব্যস্থাপনা, ওষুধ না দেয়া, জরুরি মুহূর্তে চিকিৎসকের অনুপস্থিতি ও প্রাথমিক চিকিৎসা না মেলার কারণে মামুলি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা নিতেও শিক্ষার্থীদের ছুটতে হচ্ছে বাইরের চিকিৎসা কেন্দ্রে। এতে বাড়তি টাকা ব্যয়ের পাশাপাশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সাধারণ চিকিৎসা ছাড়াও এখানে খোলা হয়েছে দন্ত বিভাগ ও চক্ষু বিভাগ। দন্ত বিভাগে রয়েছেন দু’জন চিকিৎসক। আর বিশেষজ্ঞ হিসেবে আছেন একজন চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ সপ্তাহে দুইদিন বসেন। এটিকে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল মনে করেন সেবাগ্রহীতারা।
দিনের বেলা ডাক্তার থাকলেও রাতের বেলা দায়িত্ব পালন করেন মাত্র একজন ডাক্তার। তবে চিকিৎসকদের সার্বিক সেবাদানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে উদাসীনতার অভিযোগ রয়েছে। এদিকে রাতে বেলায় জরুরী চিকিৎসায় বমি, মাথা ব্যাথা, এলার্জি, সর্দি, কাশিসহ ছোটখাটো সব রোগের চিকিৎসায় ওষুধ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দপ্তরগুলো বন্ধ হওয়ার পরপরই চিকিৎসক শূন্য হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ চিকিৎসা কেন্দ্রটি। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের অবস্থা আরও করুণ। ওই দুই দিন নামমাত্র হাজিরা দিতে আসেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, ‘কয়েকদিন আগে রাতে আমি শারীরিক সমস্যার জন্য মেডিকেল সেন্টারে গিয়েছি। কিন্তু সেখানে দায়িত্বগত ডাক্তার ভালোভাবে পরীক্ষা না করেই বলেন রাতের বেলা কোনো ওষুধ দেয়ার নিয়ম নেই। শুধুমাত্র ইঞ্জেকশন দেওয়া যাবে। এরপর তিনি আমাকে ওষুধ না দিয়েই বিদায় করে দেন। পরবর্তীতে আমি ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে ওষুধ কিনে খেয়েছি’।
আরেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন বলেন, ‘আমার এলার্জি জনিত সমস্যার কারণে ডাক্তার আমাকে নিয়মিত একটা ক্রিম ব্যবহারের উপদেশ দেন, চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে একবার আমাকে এই ক্রিম দেয়া হলেও এরপর থেকে ওষুধ সংকট বলে আর দেয়া হয়নি। কয়েকবার খোঁজ নিয়েও জানতে পারি যে, এই ওষুধ ‘স্টক আউট’।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন,’ বর্তমানে পর্যাপ্ত ঔষুধের ঘাটতির বিষয়ে আমরা অবগত। এ ব্যাপারে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ সপ্তাহে আমাদের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি এ সপ্তাহে শেষে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, ‘একজন ডিউটিরত ডাক্তার যেকোনো সময় জরুরী চিকিৎসায় রোগীকে পর্যাপ্ত সেবা ও ওষুধ দিতে বাধ্য। রাতের বেলা ওষুধ না দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগ খতিয়ে দেখবো এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।’
ইবিতে কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্নিত হচ্ছে অনলাইন শিক্ষাক্রম