নাজিম হোসেন, ইবিঃ দরজা আছে তো ছিটকিনি নেই, বদনা আছে তো ট্যাপে পানি নেই! দুর্গন্ধের কারণে ভেতরে প্রবেশ দায়। এমনই বেহাল অবস্থা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত অনুষদ ভবনসমূহের শৌচাগারগুলোর। দিনের পর দিন পরিষ্কার না করা ও তদারকির অভাবে নোংরা হয়ে থাকে বিভিন্ন অনুষদের ভবন সমূহের প্রায় প্রত্যেকটি শৌচাগার।
অনুষদ ভবন, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবন, মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবন ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবন ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ফ্লোরের বাথরুমগুলোর পলেস্তারা খসে পড়েছে, কমোড-পানি সাপ্লাইয়ে সমস্যা হয়ে আছে, দরজাগুলো ভাঙা-অর্ধভাঙা, কোথাও আবার আবর্জনার ভাগাড়। বেসিনে ট্যাপ আছে কিন্তু পানি আসে না, আবার কোনওটিতে ট্যাপই নেই। বেশিরভাগ বেসিনের উপরেই আয়না উধাও হয়ে গেছে, আবার পুরোটা থাকলেও তার উপর রঙ আর চুন পড়ে চেহারা দেখা যায় না। অনেকগুলো শৌচাগারে বদনা পাওয়া যায়নি, তাছাড়া বেশিরভাগ শৌচাগারের দরজায় কোনও ছিটকিনি নেই, ছিটকিনিবিহীন দরজায় কলমই ভরসা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের নীচতলায় শৌচাগারের পাশেই রয়েছে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের দুটি ক্লাসরুম। অনেক সময় শৌচাগার থেকে আসা দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে বসে থাকতেই কষ্ট হয়।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান বলেন, ‘শৌচাগারের পাশেই আমাদের ক্লাসরুম, শৌচাগার থেকে আসা দুর্গন্ধে ক্লাসে টিকে থাকাই দায়, এতে আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। আমাদের পুরো ফ্লোরে একটু মাত্র শৌচাগার, তাও এটার যে দূরাবস্থা, তাতে এটা পুরোপুরি ব্যবহার অনুপযোগী। এব্যাপারে কতৃপক্ষকে কয়েকবার অবগত করেও কোনো সমাধান পায়নি।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর পরিষ্কার পরিছন্ন রাখার সার্বিক দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস শাখার।
এসকল বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (এস্টেট শাখা) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু বলেন, ‘প্রত্যেকটি অনুষদের ডীনের অধীনে পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী দেয়া আছে। এর বাইরে তাদের অতিরিক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রয়োজন হলে তারা এস্টেট অফিসে আবেদন করলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. হারুন-উর-আশকারী বলেন, আমাদের পুরো অনুষদ ভবনে মাত্র একজন সুইপার। লোকবল সংকটের কারণে একজন সুইপারের একার পক্ষে প্রতিদিন এতগুলো শৌচাগার পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব হয়ে উঠেনাহ। লোকবল নিয়োগের ব্যাপারে ইতোপূর্বে কয়েকবার এস্টেট অফিসে আবেদন করেও কোনো সমাধান পায়নি।
আমরা পুনরায় আবেদন জমা দিবো, আশা করি তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।’