The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪

ইবিতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে থানায় আশ্রয় নিল ছাত্রলীগ কর্মী

ইবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে থানায় আশ্রয় নেন ইসলামী শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী। শনিবার রাত ৮টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর থেকে বাঁচতে ক্যাম্পাস থেকে দৌঁড়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেন ওই কর্মী৷ আবদুল হাফিজ নামের ওই ছাত্রলীগ কর্মী পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিভাগের রিটেক পরীক্ষা দিতে অইদিন দুপুরে ক্যাম্পাসে আসেন হাফিজ। বিকালের দিকে হল গেট থেকে শিক্ষার্থীরা নিষেধ করার পরও পাঁচ ছয়জনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি জোরপূর্বক হলে ঢুকে ৩৩৩ নং কক্ষে অবস্থান করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সহ-সমন্বয়ক তাকে নিরাপদে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিতে হলের গেটে নিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে সেখানে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তার গলায় জুতার মালা পরানোর চেষ্টা করেন এবং মারধর করে ধাওয়া দেয়। এসময় শতাধিক শিক্ষার্থী তার পিছনে বিভিন্ন ছাত্রলীগ বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে তাকে ধাওয়া করে। পরে তিনি হলের সামনে থেকে দৌঁড়ে ফুটবল মাঠের মধ্য দিয়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেন।

পরে থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে ‘হল ও দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ করলে’ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে মর্মে তার থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া, আওয়ামী সরকারের সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করা এবং হলের ডাইনিং ও বিভিন্ন দোকানে বাকি খাওয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কর্মী হাফিজ বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে এসেছি। কিন্তু এরকম কিছু হবে ভাবিনি। শিক্ষার্থীরা শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজ ভেবেছিলো। যে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের মারধর করেছিলো। আমি সেই হাফিজ না। আমি ছাত্রলীগের সঙ্গেও জড়িত ছিলাম না। আন্দোলনের সময় কাউকে হুমকি দেইনি। আর ডাইনিং ম্যানেজার ও দোকানদারদের রোববারের মধ্যে টাকা দিয়ে দেব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়করা বলেন, শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজ ভেবে মূলত তার দিকে শিক্ষার্থীরা চড়াও হয়। তবে ওই হাফিজ না হলেও এর বিরুদ্ধেও হলে বাকি খাওয়া, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দেয়া সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. এয়াকুব আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ফোন দিলে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আগামী ৭ তারিখের মধ্যে তাকে বাকি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে৷ টাকা পরিশোধ করলে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে।

ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন রহমান বলেন, বিষয়টি থানার কোনো বিষয় নয়। শিক্ষার্থীদের হাত থেকে বাচতে এক ছাত্র থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছিল। পরে শিক্ষকরা এসে বিষয়টি মিমাংসা করে তাকে নিয়ে গেছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.