ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় ছয়জনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। সেই সাথে কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা এই মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হয় অভিযুক্তদের। বহিষ্কৃতরা হলেন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর ইমন, শুভ, আকিব, সাকিব, পুলক এবং আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিকী কাব্য।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭ টায় জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রেরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয় ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাম্প্রতিক সময়ে র্যাগিং এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে ভাংচুরের বিষয়ে পৃথক ২ টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১ টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন, আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান সহ ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, জড়িতদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। তাদের জবাবের প্রেক্ষিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়া হবে। আপাতত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সাপেক্ষে পর্যালোচনা করে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি।
র্যাগিং এর শিকার শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান বলেন, ইমন ভাই ও শুভ ভাই এগ্রেসিভ ভাবে আমাকে র্যাগ দিয়েছিলো। আমি চাই তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক তা না হলে পরবর্তীতে তারা আবার ক্যাম্পাসে ফিরবে। যার ফলে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো। তাই আমি মনে করি দুইজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করে বাকীদের বিষয়ে প্রশাসন যা ভালো বুঝবে। তবে আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেনো র্যাগিং না হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।
এদিকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিকাল চারটার দিকে মূলফটক আটকিয়ে আন্দোলন করেন র্যাগিং কাণ্ডে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সহপাঠিরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুষ্টিয়া ঝিনাইদহগামী বাসে যাতায়তকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দূর্ভোগের শিকার হয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় তারা আন্দোলন স্থগিত করে।
এরআগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেয় ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ঘটনা তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম।