The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

ইবিতে বিবস্ত্র করে র‍্যাগিং: অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি, শাস্তির সুপারিশ

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে (গণরুমে) এক নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র‍্যাগিংয়ের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনের গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনের একাধিক সুত্রে এই খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রশাসন ও হল সুত্র জানায়, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সবগুলো অভিযোগের প্রমাণও পাওয়া গেছে। শাস্তি বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হওয়ায় শাস্তির ধরন এবং নিয়মানুযায়ী জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সাগর। তারা দুইজনই লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে গণরুমে থাকেন৷

এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে ভুক্তভোগীকে ডাকেন অভিযুক্ত কাফি ও সাগর। এ সময় তাকে উলঙ্গ করে ব্রেঞ্চের ওপর দাড় করিয়ে রাখেন অভিযুক্তরা। এছাড়াও তাকে রড দিয়ে আঘাত করাসহ বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা, হাতে ঝুলিয়ে রাখা ও নাকে খত দেওয়ানো হয়। এছাড়াও ভুক্তভোগীকে তার বাবা-মা তুলে গালিগালাজ এবং উলঙ্গ অবস্থায় অশ্লীল ভিডিও দেখতে বাধ্য করা হয়।

তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ না দিলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের সুত্র ধরে শেখ রাসেল হলের তৎকালীন প্রোভস্ট অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি পৃথক ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে লালন শাহ হল কর্তৃপক্ষও।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির একাধিক সুত্র জানায়, তদন্তে অভিযুক্ত দুজনের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুজনের অপরাধের মাত্রা ভিন্ন হওয়ায় মাত্রা উল্লেখ করে রমজানের ছুটির আগেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮/৯ পৃষ্ঠার এবং হল কর্তৃপক্ষের ৬ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এখন অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে প্রশাসন বিধি মোতাবেক অভিযুক্তদের শাস্তি নির্ধারণ করবে।

লালন শাহ হল প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. আলতাফ হোসেন বলেন, হল প্রশাসন কর্তৃক গঠিত কমিটির রিপোর্ট আজকে জমা দিয়েছি। অভিযুক্ত, ভুক্তভোগী, সাধারণ শিক্ষার্থী সবার সাক্ষাৎকার নিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোঃ আকতার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি। বিষয়টির গোপনীয়তা থাকায় এ মুহূর্তে বিস্তারিত বলতে পারছি না। পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছ থেকে সার্বিক বিষয়ে জানতে পারবেন।

প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, আমরা আমাদের মতো তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের আগে আমরা তো এবিষয়ে কিছু বলতে পারি না। তদন্ত প্রক্রিয়ায় আমরা যা পেয়েছি তাই উল্লেখ করেছি। বাকি সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়েছে। এরপর পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.