মোস্তাক মোর্শেদ, ইবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র্যাগিংয়ের নামে এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তিন শিক্ষার্থী শেষ দিনেও কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ নোটিশ) জবাব দেননি। জবাব দিতে তারা আরও সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এইচ এম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ১৫ মার্চ বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হলেও নির্যাতনকারী পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, হালিমা খাতুন ঊর্মী ও ইসরাত জাহান মীম আরো সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। বাকি দুজন তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান নোটিশের জবাব দিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আরও বলেন, সময় চেয়ে আবেদন করা তিন ছাত্রী কিছু তথ্য চেয়েছেন। তারা হাইকোর্টের নির্দেশের এবং তদন্ত প্রতিবেদনের কপির অনুলিপি চেয়েছেন। বিষয়টি আইন প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। তারপর উপাচার্য সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ অবশ্য এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে তাকে কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি পরবর্তী ছাত্র শৃঙ্খলা বৈঠকে তোলা হবে এবং সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও ছাত্র উপদেষ্টা ড.সেলিনা নাসরিন বলেন, আমরা এখনো বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যেই আছি। ওই পাঁচ ছাত্রীকে বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। তারা যেসব চিঠিপত্র দিয়েছেন, তা শিগগির ছাত্রশৃঙ্খলের বৈঠকে তোলা হবে।
এর আগে, গত ৬ মার্চ আগামী ১৮ মার্চের ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং বিভাগের ১ম বর্ষের ২য় সেমিষ্টার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আবেদন জানিয়েছিল বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম। তবে তা নাকচ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে গতকাল বুধবার তাবাসসুমের উকিল একটি নোটিশ পাঠায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান বরাবর যাতে পরীক্ষায় অংশ না নিতে দিলে বিভাগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান জানান, বহিষ্কৃতাদেশে তাকে সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিলো। এখন সে পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সেই বিষয়টি প্রশাসনকে ক্লিয়ার করতে আমি উকিল নোটিশটি সংযুক্ত করে রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। এখনো পর্যন্ত পরীক্ষা আগামী শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টায়ই অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ফোনে পাওয়া যায়নি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামকে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ৫ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং তাদের কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা সেই মর্মে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সবাইকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।