ইবিতে অযোগ্যদের পোষ্যকোটায় ভর্তি বন্ধের দাবি, আন্দোলনের হুশিয়ারি
ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পোষ্য কোটায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে উপাচার্যের কক্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী এ দাবি জানান। পাশ নম্বর ৩০ প্রাপ্তির নিয়ম ভেঙ্গে পোষ্য কোটায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার, প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, চারুকলা বিভাগের সভাপতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন, টিএসসিসির পরিচালক প্রফেসর ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, আইসিটি সেলের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. আহসান-উল-আম্বিয়া, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, পোষ্য কোটায় ইতিমধ্যে শর্ত পূরণ করে অনেককে ভর্তি করা হয়েছে। এ অবস্থায় অকৃতকার্যদের ভর্তির সুযোগ নেই। কোটায় ভর্তির সুযোগ পেয়েও যারা কৃতকার্য হতে পারেনি তারা কোনভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। অযোগ্যদের ভর্তি করালে তারা বিভাগে পড়াশোনায় তাল মেলাতে পারে না। এ কারণে অন্য শিক্ষার্থীদের ভুগতে হয়। সময়মতো শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করতে না পারায় সেশনজটের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো, এফ ডি আর ফান্ডের সমস্যা সমাধান, আন্তঃবিভাগ খেলাধুলা পুনরায় চালু করা, হলের খাবার এবং ইন্টারনেট সেবার মান বৃদ্ধি, ক্যাম্পাসে রাত্রিকালীন আলোক সল্পতা সমাধান ও সিসি ক্যামেরা রক্ষণাবেক্ষণ, নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার।
এদিকে, বেলা ১২ টার দিকে প্রশাসন ভবনের ৩য় তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম সর্বসম্মতিক্রমে বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত একাধিক সূত্র ও রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
ঐ সূত্র আরও জানায়, ইবি গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত থাকায় গুচ্ছের বাইরে গিয়ে অযোগ্যদের ভর্তির সুযোগ নেই। যারা নিয়ম মেনে পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন সেটাই চূড়ান্ত।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম আলী হাসান বলেন, রেজুলেশন আকারে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সিন্ধান্তের বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে সভায় উপস্থিত সবাই বলেছে গুচ্ছের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
এবিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ও ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম এমদাদুল আলম বলেন, আমরা শুনেছি যে এবছর পোষ্য কোটায় আর শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। যদি এ ধরণের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে তবে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করব। এমন সিদ্ধান্তে আমরা আহত ও অখুশি। আমাদের পরবর্তী সভায় এবিষয়ে আমরা করণীয় নির্ধারণ করবো।
এবিষয়ে গণমাধ্যম ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, আবেদনের যোগ্যতা থাকলেই ভর্তি, পৃথিবীর কোথাও এমন নিয়ম নেই। কোটায় নম্বর কমিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। গুচ্ছ কেন্দ্রীয় কমিটি যে নম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটাই চূড়ান্ত।
উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, গুচ্ছের নিয়মের কারণে এবছর শর্তের বাইরে গিয়ে আর পোষ্য কোটায় ভর্তি সম্ভব না। সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসেছিল, নিয়ম ভেঙ্গে পোষ্য কোটায় ভর্তি নেওয়া হলে তারা কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন। তাছাড়া পোষ্য কোটায় ভর্তির বিষয়টা আজ ইবির কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটিতে আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে তারা শর্ত শিথিল করে ভর্তির বিষয়ে রাজি হয়নি। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, এবছর পোষ্য কোটায় ৩০ নম্বরের নিচে প্রাপ্তদের ভর্তি নেওয়া বাঞ্চনীয় হবে না।