The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

ইউনিসেফের বিবৃতি বিশ্বের ১ কোটি ১০ লাখ মেয়ে স্কুলে নাও ফিরতে পারে

করোনা মেয়েদের জীবন ধ্বংস করছে। স্কুল বন্ধ, অর্থনৈতিক চাপ এবং পরিষেবার ব্যাঘাত সবচেয়ে অরক্ষিত মেয়েদের স্বাস্থ্য, সামগ্রিক কল্যাণ ও ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মেয়ে মহামারির পর স্কুলে নাও ফিরতে পারে। আগামী এক দশকে আরও এক কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে আছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন।

ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘কোভিড-১৯ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় মেয়েদের অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমরা বিশ্বের নারীদের জন্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কষ্টার্জিত অর্জনগুলো স্বীকার করি। আমরা আমাদের সমাজে নারীদের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো উদ্‌যাপন করি এবং ওই অর্জনগুলো যাতে সর্বত্র সব নারীর কাছে পৌঁছায়, সে জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি দ্বিগুণ করি। কিন্তু সমতার জন্য লড়াই এখনো শেষ হয়নি। প্রকৃতপক্ষে কোভিড-১৯–এর আগেও আমাদের সময়ের সবচেয়ে ব্যাপক ও উল্লেখযোগ্য অবিচার হিসেবে লিঙ্গবৈষম্য টিকে ছিল। মহামারির প্রভাবে এই অবিচার কয়েক গুণ বেড়েছে।’

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা যখন কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের তৃতীয় বছরে প্রবেশ করছি এবং মহামারি-পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করছি, সে ক্ষেত্রে সত্যিকারের পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় অবশ্যই লিঙ্গসমতা থাকতে হবে। কোভিড-১৯ মেয়েদের জীবন ধ্বংস করছে। স্কুল বন্ধ, অর্থনৈতিক চাপ এবং পরিষেবার ব্যাঘাত সবচেয়ে অরক্ষিত মেয়েদের স্বাস্থ্য, সামগ্রিক কল্যাণ ও ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মেয়ে মহামারির পরে স্কুলে নাও ফিরতে পারে। আগামী এক দশকে আরও এক কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে আছে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) মতে, আরও ২০ লাখ নারী যৌনাঙ্গ বিকৃতির শিকার হতে পারে।’

ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘যেহেতু লকডাউন শিশুদের আরও বেশি সময় তাদের বাড়িতে কাটাতে বাধ্য করে, এ ক্ষেত্রে গৃহস্থালি কাজের বেশির ভাগই মেয়েদের কাঁধে বর্তায়।

অনেকে তাদের নির্যাতনকারীর সঙ্গে একত্রে থাকতে বাধ্য হচ্ছে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য সহায়ক—এমন সেবা ও কমিউনিটি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকছে। যৌন সহিংসতাসহ লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বাড়ছে। আমরা মেয়েদের একটি প্রজন্মকে তাদের বাকি জীবনের জন্য এই মহামারির পরিণাম ভোগ করতে দিতে পারি না। আমরা যখন মহামারি-পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করছি, তখন মেয়েদের অবশ্যই বৈশ্বিক, জাতীয় ও স্থানীয় মহামারি মোকাবিলা ও পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার কেন্দ্রে রাখতে হবে। এর মানে হলো মেয়েদের তাদের শিক্ষা পুনরায় শুরু করার সুযোগ দিতে স্কুলগুলো খোলা রাখা এবং যারা পিছিয়ে পড়েছে, তাদের ঘাটতি পূরণে সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় সম্পদের পেছনে বিনিয়োগ করা। এর অর্থ হলো মেয়েদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, অধিকারসহ তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় পুনরায় বিনিয়োগ করা, ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সেবাগুলো প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য সুযোগ বাড়ানো এবং বাল্যবিবাহ, নারীর যৌনাঙ্গ বিকৃতির মতো ক্ষতিকর চর্চাসহ সব ধরনের সহিংসতা থেকে মেয়েদের রক্ষা করা।’

ক্যাথরিন রাসেল আরও বলেন, ‘মেয়েদের ক্ষমতায়ন অগ্রশক্তির চালিকা শক্তি। সারা বিশ্বের মেয়েরা তাদের অধিকারের জন্য সোচ্চার হচ্ছে এবং ঠিক এ ধরনের পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে। এর ওপর বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি নির্ভর করে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. ইউনিসেফের বিবৃতি বিশ্বের ১ কোটি ১০ লাখ মেয়ে স্কুলে নাও ফিরতে পারে

ইউনিসেফের বিবৃতি বিশ্বের ১ কোটি ১০ লাখ মেয়ে স্কুলে নাও ফিরতে পারে

করোনা মেয়েদের জীবন ধ্বংস করছে। স্কুল বন্ধ, অর্থনৈতিক চাপ এবং পরিষেবার ব্যাঘাত সবচেয়ে অরক্ষিত মেয়েদের স্বাস্থ্য, সামগ্রিক কল্যাণ ও ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মেয়ে মহামারির পর স্কুলে নাও ফিরতে পারে। আগামী এক দশকে আরও এক কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে আছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন।

ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘কোভিড-১৯ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় মেয়েদের অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমরা বিশ্বের নারীদের জন্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কষ্টার্জিত অর্জনগুলো স্বীকার করি। আমরা আমাদের সমাজে নারীদের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো উদ্‌যাপন করি এবং ওই অর্জনগুলো যাতে সর্বত্র সব নারীর কাছে পৌঁছায়, সে জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি দ্বিগুণ করি। কিন্তু সমতার জন্য লড়াই এখনো শেষ হয়নি। প্রকৃতপক্ষে কোভিড-১৯–এর আগেও আমাদের সময়ের সবচেয়ে ব্যাপক ও উল্লেখযোগ্য অবিচার হিসেবে লিঙ্গবৈষম্য টিকে ছিল। মহামারির প্রভাবে এই অবিচার কয়েক গুণ বেড়েছে।’

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা যখন কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের তৃতীয় বছরে প্রবেশ করছি এবং মহামারি-পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করছি, সে ক্ষেত্রে সত্যিকারের পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় অবশ্যই লিঙ্গসমতা থাকতে হবে। কোভিড-১৯ মেয়েদের জীবন ধ্বংস করছে। স্কুল বন্ধ, অর্থনৈতিক চাপ এবং পরিষেবার ব্যাঘাত সবচেয়ে অরক্ষিত মেয়েদের স্বাস্থ্য, সামগ্রিক কল্যাণ ও ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মেয়ে মহামারির পরে স্কুলে নাও ফিরতে পারে। আগামী এক দশকে আরও এক কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে আছে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) মতে, আরও ২০ লাখ নারী যৌনাঙ্গ বিকৃতির শিকার হতে পারে।’

ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘যেহেতু লকডাউন শিশুদের আরও বেশি সময় তাদের বাড়িতে কাটাতে বাধ্য করে, এ ক্ষেত্রে গৃহস্থালি কাজের বেশির ভাগই মেয়েদের কাঁধে বর্তায়।

অনেকে তাদের নির্যাতনকারীর সঙ্গে একত্রে থাকতে বাধ্য হচ্ছে এবং তাদের সুরক্ষার জন্য সহায়ক—এমন সেবা ও কমিউনিটি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকছে। যৌন সহিংসতাসহ লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বাড়ছে। আমরা মেয়েদের একটি প্রজন্মকে তাদের বাকি জীবনের জন্য এই মহামারির পরিণাম ভোগ করতে দিতে পারি না। আমরা যখন মহামারি-পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করছি, তখন মেয়েদের অবশ্যই বৈশ্বিক, জাতীয় ও স্থানীয় মহামারি মোকাবিলা ও পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার কেন্দ্রে রাখতে হবে। এর মানে হলো মেয়েদের তাদের শিক্ষা পুনরায় শুরু করার সুযোগ দিতে স্কুলগুলো খোলা রাখা এবং যারা পিছিয়ে পড়েছে, তাদের ঘাটতি পূরণে সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় সম্পদের পেছনে বিনিয়োগ করা। এর অর্থ হলো মেয়েদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, অধিকারসহ তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় পুনরায় বিনিয়োগ করা, ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সেবাগুলো প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য সুযোগ বাড়ানো এবং বাল্যবিবাহ, নারীর যৌনাঙ্গ বিকৃতির মতো ক্ষতিকর চর্চাসহ সব ধরনের সহিংসতা থেকে মেয়েদের রক্ষা করা।’

ক্যাথরিন রাসেল আরও বলেন, ‘মেয়েদের ক্ষমতায়ন অগ্রশক্তির চালিকা শক্তি। সারা বিশ্বের মেয়েরা তাদের অধিকারের জন্য সোচ্চার হচ্ছে এবং ঠিক এ ধরনের পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে। এর ওপর বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি নির্ভর করে।’

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন