চবি প্রতিনিধি: ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের রেজাল্ট পুনঃনিরীক্ষণ, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি কে অপসারণ সহ ৭ দফা দাবি মেনে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রেজাল্ট পুনর্মূল্যায়ন ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতির পদত্যাগ সহ ৭ দফা দাবি নিয়ে আজ(১সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে আন্দোলন শুরু করে সেই বিভাগের শিক্ষার্থীরা
তাদের ৭দফা সমূহ ছিল
১.বর্তমান পরীক্ষা কমিটি বাতিল করে নতুন পরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে মাস্টার্সের রেজাল্ট পূনর্মূল্যায়ন করা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের কারনে রেজাল্ট মেনিপুলেশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে খাতা মূল্যায়ন করতে হবে।
৩. সেশনজট মুক্ত বিভাগ করতে হবে। এবং কিভাবে সেশনজট মুক্ত করা হবে তার একটা রোডম্যাপ বা প্ল্যান বর্তমান চেয়ারম্যান কর্তৃক সবার সামনে উপস্থাপন করতে হবে। যেখানে বিভাগের সব শিক্ষকের সিগনেচার থাকা লাগবে। এবং এই সেশনজটে ভুক্তভোগী সকল শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৪. প্রতি ব্যাচের পরীক্ষা শেষে দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট পাবলিশ করতে হবে। এবং পরবর্তী ব্যাচের ক্লাস ১৫দিনের মধ্যে অবশ্যই শুরু করতে হবে। আর যেসকল ব্যাচ এখনো পুরোনো সিস্টেমে পরীক্ষা দিচ্ছে তারা যেন বৈষম্যের শিকার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং হয়রানি করার অভিযোগে অফিস সহায়ক মঞ্জুকে ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক কোন জরিমানা কিংবা অন্য টাকা (যেটা চেয়ারম্যান ফান্ড হিসেবে পরিচিত) আদায় করা যাবেনা।
৭. থিসিস যারা নিয়েছে তাদের সবার রেজাল্ট রেগুলার ব্যাচের সাথে পাবলিশ করতে হবে। বছরের পর বছর রেজাল্ট আটকে রাখা যাবেনা।
ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স এর শিক্ষার্থী জুলফিকার বলেন, আমরা ২০২১ সালে মাস্টার্স দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু ২০২৪ এসে আমাদের এই আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমাদের প্রায় ৪০ জন ভাইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেল করানো হয়েছে এবং বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে।
একই বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা জাকির পিয়াল বলেন, এমনিতেই সেশন জোটের কারণে আমাদের অনেক বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের মাস্টার্সের রেজাল্ট খারাপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই বর্তমান পরীক্ষা কমিটি বাতিল এবং নতুন করে পরীক্ষা কমিটি গঠন করে আমাদের রেজাল্ট পুনরনিরীক্ষণ করা হোক।
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আমির হোসাইন জুয়েল বলেন, সেশন জটের কারণে আমরা ৮ বছরে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছি। ভালোভাবে পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রায় ৪০জন শিক্ষার্থী ফেল করেছে। যেটা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। আমরা শিক্ষকদের কাছে কোন দাবি কিংবা সমস্যা নিয়ে গেলে তারা দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান, ২ জন ডিন ও শিক্ষকগণ মিটিং এ বসেন।আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় এবং আগের পরিক্ষা কমিটি বাতিল করে নতুন করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়াও অফিস সহায়ক আবু মঞ্জুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে তাকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহ এ নূর কুদসী ইসলাম।