আগামী দ্বাদশ নির্বাচনের উত্তেজনা ইতিমধ্যে সারাদেশে প্রভাব ফেলেছে। জনমনে তৈরি হয়েছে ভিন্ন রকম আমেজ। ছাত্রনেতাদের মধ্যেও তেমন আমেজ বিদ্যমান। আগামী নির্বাচন নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের ভাবনা তুলে ধরেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক নিয়ামতুল্লাহ মুনিম।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। ইতিমধ্যে তফসিল ঘোষনা এবং প্রার্থীদের মনোনয়নের বৈধতা যাচাই-বাছাইসহ সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিজস্ব প্রতীকে ভোটের জন্য প্রার্থীরাও ছোটাছুটি করছে। একজন শিক্ষার্থী ও ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় নির্বাচন সাংবিধানিক ভাবে যেমন গুরুত্ব বহন করে এবারের নির্বাচনের তাৎপর্য ও গুরুত্বের দিক থেকে আরো অনেক অধিক বলে মনে করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই দেশটাকে উন্নয়ন ;অগ্রযাত্রার অনন্য পর্যায়ে পৌঁছেছেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে ;সংবিধান কে রক্ষা করতে নির্বাচন কে সফলভাবে পরিচালনা এবং সফল সমাপ্তির বিকল্প নেই। আমাদের শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নেবার সময় এসেছে এই স্বাধীনতার ৫০ বছর শেষে একটি ক্ষুধা;দারিদ্রমুক্ত দেশে রূপান্তর করা। দেশের প্রতিটা জায়গাতে ডিজিটালের ছোয়া পৌছানোর। এই দেশটা স্মার্ট সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে নাকি, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীকারীদের যেই স্বপ্ন একটি ব্যার্থ, অকার্যকর, আগুন সন্ত্রাসের এবং হামলাকারীদের নেতৃত্বে পাকিস্তান, আফগানিস্থানের মতো হবে? এ সিদ্ধান্তটি যুব সমাজকেই নিতে হবে। নৌকার পক্ষে দেশে যে গনজোয়ার উঠেছে; আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই দেশের ছাত্র সমাজ নিজেদের রেজাল্ট প্রকাশের দিন যেমন করে উচ্ছ্বাসের সাথে জয় বাংলা জিতবে আবার নৌকা গান সমস্বরে গেয়ে উঠছে ঠিক তেমনি এই দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ;একটি স্বাধীন দেশে বিদেশী কোন অপশক্তির কাছে মাথা নত না করার যে শপথ তরুন শিক্ষার্থীরা নিয়েছে ঠিক তেমনি নৌকাকে বিজয়ী করার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেমের প্রমান দিবে। এই দেশের স্বাধীনতার মুল লক্ষ্য অব্যাহত থাকবে৷ তারুণ্যের প্রথম ভোট ;নৌকার পক্ষে হোক এটাই আমার প্রত্যাশা৷
-নাসিম আহমেদ জয়, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
প্রথমত এইটা কোন নির্বাচনই না। নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণ প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জনগণের একটি বৃহৎ অংশ অংশগ্রহণ করছে না সেখানে তাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কোন প্রশ্নই ওঠে না। দেশের বড় দুটি দলসহ নিবন্ধিত যে কোন একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সেই নির্বাচন জনগণের কাছে অংশগ্রহণমূলক হয় না। ধরে নিন, এমন একটি নির্বাচন হচ্ছে যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না সেটাও আমার কাছে এবং বাংলাদেশের জনগণের কাছে অংশগ্রহণমূলক বা কোন নির্বাচন বলেই গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না। তাই আমি মনে করি যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক তথা দেশের জনগণের না সেই নির্বাচনে জনগণের কোন প্রত্যাশায় থাকে না।
-মো. আনোয়ার পারভেজ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রদল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
‘‘বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তদারকি সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। বিশেষ করে বিগত দুটি নির্বাচন (২০১৪ ও ২০১৮) দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে, এবং দুটি নির্বাচনেই জনগণ ভোট দিতে পারেনি। জনগণের ভোট দেওয়ার সুষ্ঠু অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার কারণে এবারে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন শুধু ব্যক্তির দাবিতে নই বরং পরিনত হয়েছে জনগণের দাবিতে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পক্ষের ও বিভিন্ন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে এবার সকল দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে গনতান্ত্রিক দেশের শাসন ব্যবস্থা বজায় থাকবে বলে আশা করছি। পাশাপাশি প্রত্যেকের নিরপেক্ষ ও নির্দ্বিধায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপামর জনসাধারণ তাদের পছন্দের যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে সক্ষম হবে এবং সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করে দক্ষতার সাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার পথে।’’
-মুখলেসুর রহমান সুইট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি স্বাভাবিক কার্যক্রম। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় এদেশের জনগণও তাদের প্রতিনিধি গ্রহণ করে নির্বাচনে জয় যুক্ত করার মাধ্যমে। বাংলাদেশের সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে এপর্যন্ত ১১ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচন আসলেই জনগণ নতুন কিছুর আশা করে। প্রতিনিধিরা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা ভাবনা তুলে ধরে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার গঠন করতে চায়। এসবের মাঝে জনগণ চায় তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি ও সরকার গঠন করতে। কিন্তু নির্বাচন সামনে আসলেই বিভিন্ন মহলের দৌড়ঝাঁপ ও দেশের মধ্যে অস্থিরতা তৈরির ফলে জনগণের মনে তৈরি হয় এক কৃত্রিম আতঙ্ক। যার মূল কারণ হিসেবে আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা। এপর্যন্ত হয়ে আসা প্রত্যেক নির্বাচন কোনো না কোনো ভাবে বিতর্কিত হওয়ায় পরের ভোট আসলেই সরকার পক্ষ ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার অস্থিরতা তৈরি হয়। নির্বাচন কমিশন যদি প্রত্যেক প্রার্থী ও প্রত্যেক দলের জন্য নির্বাচনে আসার বা নির্বাচন করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারে তাহলে এই অস্থিরতা কোন দলই তৈরি করতে পারবে না বলে আমি মনে করি। গত কয়েকটি নির্বাচন থেকে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলেই বিদেশি মহল গুলোর তৎপরতাও বেড়ে যায়। যার ফলে অনেক সময় নির্বাচন প্রভাবিত হয় বা তাদের তৎপরতা নির্বাচনকে প্রভাবিত করে। যা জনগণকে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত করে। এসকল বাধা ও প্রভাব বা অস্থিরতা কমাতে নির্বাচন কমিশনের মূখ্য ভূমিকা পালন করা উচিত যেন নির্বাচন সবার মাঝে গ্রহনযোগ্যতা পায়, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করতে এবং নির্বাচনী পরিবেশের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয় প্রত্যেক দল ও প্রার্থীর জন্য।
-ইয়াশিরুল কবির সৌরভ, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা