The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে সাইকেলে ৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি

পশ্চিম আফ্রিকার ছোট একটি দেশ নাম গিনি। দেশটি থেকে মিসরের দূরত্ব মোটামুটি ৪০০০ কিলোমিটার। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে এ পথ খুব একটা বেশি নয়, তবে এ পথ সাইকেলে পাড়ি দেওয়া একটু কঠিন কাজই বটে। সে কাজটি করেছেন গিনির অদম্য ছাত্র মামাদু সাফায়ই ব্যারি। কারণ পড়াশোনা। তিনি শুধু পড়ার জন্য এ পথ সাইকেলে পাড়ি দেন।

জ্ঞান অর্জনের জন্য সাইকেলে এতটা পথ পাড়ি দেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির মামাদু সাফায়ই ব্যারি। বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দীর্ঘ এ পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

মামাদু ব্যারি মিসরের রাজধানী কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সে ভর্তির জন্য গত মে মাসে গিনির নিজ বাড়ি থেকে বের হন। মামাদু শেষমেষ মিসরে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছেন। পেয়েছেন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আল শরিফ ইনস্টিটিউটের পূর্ণাঙ্গ বৃত্তিও। মামাদুর চার মাস সাইকেল চালিয়ে পড়তে যাওয়ার গল্প প্রকাশ করেছেন বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক জ্ঞান অর্জনের জন্য মামাদু সাফায়ই ব্যারি মিসরে যান। এরপর দেশটির আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু কেন সাইকেলে গেলেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানের টিকিট কেনার মতো অর্থ তাঁর পকেটে নেই, কিন্তু পড়তে চান আল আজাহারে, তাই সাইকেলেই রওনা হন তিনি।

২৫ বছর বয়সী মামাদু দুঃসাহসিক এ সফরের সময় তিনবার আটক হয়েছিলেন। নানা পথ, ঝামেলা পেরিয়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছান। তাঁর কষ্ট বৃথা যায়নি। মিসরের বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর যাত্রাপথের গল্প জানতে পেরে পূর্ণাঙ্গ স্কলারশিপ দিয়েছে তাঁকে।

মামাদু বিবিসিকে বলেছেন, তিনি জানতেন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সটিতে পড়ার ব্যয়ভার বহন করতে পারবেন না তিনি। কিন্তু তারপরও সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। গিনি থেকে মিসরের পথে তিনি রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যুত্থান ও সহিংসতায় বিপর্যস্ত পশ্চিম আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ পাড়ি দেন। মালি, বুরকিনা ফাসো, টোগো, বেনিন, নাইজার ও চাদ পেরিয়ে মিসরে যান তিনি। বুরকিনা ফাসো ও টোগোতে কোনো কারণ ছাড়াই তাঁকে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়। চাদে পৌঁছানোর পর মামাদুরের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন এক সাংবাদিক। এরপরই মামাদুরের গল্প অনেক মানুষ জানতে পারে।

মামাদু সাফায়ই ব্যারির সাক্ষাৎকার প্রকাশের পরই অনেকে তাঁকে সাহায্যর জন্য এগিয়ে আসেন। ৫ সেপ্টেম্বর মামাদু ব্যারি মিসরে তাঁর স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সে অধ্যয়নের সুযোগ পান। আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ডিন ড. নাহলা এল সেইদি তাঁকে বৃত্তিও দেন। আল আজহার ইউনিভার্সিটি ফেসবুকে ব্যারির সঙ্গে তাদের একটি ছবি শেয়ার করে বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে আগ্রহী।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.