নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেসবুকে রহস্যময় এক পোস্ট করে আত্মহত্যা করেছেন আরাফাত হোসাইন সিয়াম (২৫) নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী।
ভারতীয় লেখক সদগুরুর লেখা ‘ডেথ’ নামে একটি বই পড়ছিলেন আরাফাত হোসাইন সিয়াম। সদগুরুর লেখা ডেথ নামের বইটি পড়ে আরাফাত আত্মহত্যার অনুপ্রেরণা পান বলে মনে করছেন তার একাধিক বন্ধু।
আরাফাতের বন্ধুদের দাবি, আরাফাত সদগুরুর ডেথ বইটি নিয়মিত পড়তেন। আরাফাতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের সময় তার টেবিলের উপরেও বইটা আমরা দেখতে পেয়েছি। আরাফাত কারও সাথে তেমন মিশতেন না। এছাড়া নানাভাবে তিনি মেডিটেশন করতেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন সহপাঠীরা। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান তারা।
৩ এপ্রিল ভোরে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন আরাফাত। ওই স্ট্যাটাসে মৃত্যু নিয়ে নানা কথা লিখেছিলেন তিনি। দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, জীবনকে বুঝতে হলে আগে মৃত্যুকে বুঝতে হবে। এটা কি সবকিছুর শেষ নাকি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার একটা প্রক্রিয়া মাত্র? জীবন এবং মৃত্যু এই মহাবিশ্বে সমান্তরালভাবে একসাথে থাকে। মৃত্যু বলতে আমরা যা বুঝি তা হলো আমাদের দৈহিক মৃত্যু। কিন্তু আত্মা কখনো মরে না। আত্মার অবস্থা অনুযায়ী উচ্চ বা নিম্ন মাত্রায় চলে যায়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তাহলে কি তুমি তোমার পছন্দে মরতে পারবে? সোজা উত্তর হলো, হ্যাঁ তুমি পারবে। তবে একটি বড় কিন্তু আছে! জীবনের উদ্দেশ্য পূরণ করার পরেই তুমি তোমার পছন্দে মরতে পারবে।
আরাফাত সিয়ামের সহপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী টগর বলেন, দুপুরের আগে সিয়ামের কক্ষের সামনে যেয়ে কয়েকবার ডাকাডাকি করেছি। এরপর বিকেলে আরও একবার ডাকাডাকি করেছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। পরে সন্ধ্যায় যখন আবার এসে ডাকাডাকি করছি তখন কোনো সাড়া না পেয়ে জানালার গ্লাসের ওপরের কাগজ সরিয়ে ভিতরে সিয়ামকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তখন দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসি।