রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহীতে আগমন উপলক্ষ্যে আজ ২৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মতবিনিময় সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.শাহ আজম এ কথা বলেন।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য মহোদয় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে তার প্রজ্ঞা, সৃজনশীল চিন্তা, অসীম সাহসিকতা দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এবং সাফল্যের সঙ্গে বাংলাদেশকে যে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছেন তা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যে-সব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা সেতু, যা অবহেলিত দক্ষিণ অঞ্চলকে কেন্দ্রের সাথে যুক্ত করেছে, একইসঙ্গে যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে নির্মীয়মাণ ডবল লাইন রেলসেতু কেন্দ্রের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সংযোগ সহজতর করবে।
উপাচার্য মহোদয় বলেন, আগামী ২৯ জানুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী সফর করবেন জেনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, আপনকে স্বাগত জানাই। উপাচার্য মহোদয় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন মহান স্বাধীনতা অর্জনের তেতাল্লিশ বছর পর। আমরা চাই, তাঁর হাতেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হোক। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে সর্বাত্মক সহযোগিতা, পৃষ্ঠপোষণা করবেন বলে আশা করি।
সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমদ, রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ সোহরাব আলী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম, সকল বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষকবৃন্দসহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ সংযুক্ত ছিলেন।
এরপূর্বে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ আজম, রাজশাহীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিসভায় যোগদান করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সফল মেয়র জননেতা এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন। সে সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য বলেন, রাজশাহী শিক্ষার নগরী। রাজশাহীর শিক্ষাক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আরও কিছু প্রেষণা দান করেন তাহলে প্রকারান্তরে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে । রাজশাহীর চামড়া শিল্পের উন্নয়ন এবং এখানে বিশেষায়িত ইকোনমিক জোন করার যে পরিকল্পনা ছিলো সেটি যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে রাজশাহী সিটির যে উন্নয়ন হয়েছে, তা বিস্ময়কর। দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী শহর দেশ-বিদেশের মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে এবং একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শহরের সুযোগ সুবিধা, শৃঙ্খলা সবকিছু মিলিয়ে ইতোমধ্যেই শহরটি সবুজ এবং পরিষ্কার শহর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং সেই কাজটি করেছেন শহীদ পরিবারের সন্তান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে যদি শহরের উন্নয়ন করা যায় এবং যে প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে তার প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করা যায়, তাহলে আমরা অচিরেই দেখব যে রাজশাহীর পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
প্রফেসর শাহ্ আজম বলেন, কৃষি এখানকার প্রধান জীবিকা, সুতরাং কৃষির উন্নয়নের জন্য রাজশাহীতে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, যা রাজশাহীবাসীর দাবি এবং এর বাইরেও আজকের যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন এবং তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যেভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশকে আইসিটিতে সমৃদ্ধ করে চলেছেন এই দিক থেকে এখন আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখতে পারি যে বর্তমান বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী আমরা যদি জনসম্পদ তৈরি করতে চাই তাহলে আমাদের প্রথাগত গ্রাজুয়েট তৈরির যে রীতি রয়েছে তা দিয়ে বর্তমান বিশ্বের চাহিদা পূরণ কঠিন। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সংস্কার এবং ডাইভারসিফাই ট্রেনিং এর প্রয়োজন হবে। এই ট্রেনিংটি এক বছর, ছয় মাস, তিন মাস এমনকি কখনো কখনো এক সপ্তাহের ট্রেনিং দিয়ে একটা মানুষকে দক্ষ করানোর কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু রাজশাহী শিক্ষার নগরী, অসংখ্য মানুষ রাজশাহীতে রয়েছেন এবং এখানে ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজ করার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, এখানে যদি সমৃদ্ধ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট করা যায় সেটি বগুড়ার আরডিএ কিংবা বিএডিসির মতো আবাসিক অবস্থানের সুযোগসহ তাহলে এখানে রাজশাহীর যে মান সেটা পূরণ করার সাথে সাথে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি দেশের বাইরের মানুষকেও আকর্ষণ করতে পারবো, যা পরিশেষে রাজশাহীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।
উপাচার্য মহোদয় বিশ্বাস করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী আগমন এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাবে, মানুষের মধ্যে একটি অনুপ্রেরণা তৈরি হবে। এতে মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একটি প্রেষণা তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে যান এলাকাবাসী কিছু না কিছু পায়। তাই আমাদের বিশ্বাস, যে এই সময়ে যখন তিনি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন এবং সেই অসীম সাহসিকতার অধিকারী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীর জন্য এবার নিশ্চিতভাবে নতুন সম্ভাবনা দেখাবেন।
এসময় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মাননীয় মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেকসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।