মাধ্যমিকের স্কুলে মেয়েদের যাওয়ার অনুমতি দিয়ে ঘোষণা দেওয়ার পরও পিছু হটেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। আফগান সরকারের এমন সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় বৈঠকের পরিকল্পনা বাতিল করেছে।
তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের পর মানবাধিকার ইস্যুতে প্রথমবারের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিলো যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এখনো তালেবানের ক্ষমতাসীনদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, মেয়েদের মাধ্যমিকের স্কুলে যেতে না দেওয়া, তালেবানের এমন সিদ্ধান্তে যারা মর্মাহত হয়েছেন তাদের সমবেদনা জানানো হচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি আরও বলেন, কাতারের দোহায় তালেবানের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা বাতিল করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এমন ঘোষণা এলো যখন বুধবার (২৩ মার্চ) তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামী আইন অনুসারে একটি পরিকল্পনা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকবে।
রাজধানী কাবুলের আশপাশের তিনটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, মেয়েরা স্কুল খোলার আনন্দে মেতেছিল বুধবার সকালে। কিন্তু পরে তাদের বাড়ি ফেরার নির্দেশনা আসে। অনেক শিক্ষার্থীই অশ্রুভেজা চোখে স্কুল ছেড়ে বাড়ি যান।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নরওয়ে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নেয় তালেবান। এরপর ৩১ আগস্ট টানা ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশটি থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা। এরপর দেশের শাসনভার তুলে নেয় তালেবান।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে নারীদের আবারও কাজ থেকে বিরত রাখা হয়। তালেবান নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও বন্ধ করে দেয়। এতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় বিশ্বজুড়ে।
সূত্র: আল-জাজিরা