The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিলেও আফগানিস্তান জিতে নিয়েছে কোটি হৃদয়

মনে করা হচ্ছিল অসম্ভব একটি টার্গেট তাড়া করে আফগানিস্তানের পক্ষে জেতা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তবে সেই অসম্ভবকে প্রায় সম্ভব করে ফেলেছিল আফগানিস্তান। ওয়ানডেতে আফগানিস্তান কখনই এত রান তাড়া করে জিততে পারেনি, সেখানে মাত্র ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রানের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল!

কিন্তু তীরে এসে যেন ডুবল তরী। শেষে একটু হিসাবের গড়মিল করে ফেলল তারা। মোহাম্মদ নবি, রশিদ খানদের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে দারুণ লড়াই জমিয়েও শেষ পর্যন্ত পারল না আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ শেষের আগেই এশিয়া কাপ থেকে তাদের বিদায় ঘটে গেল।

গতকালকের ম্যাচে জিতে ‘বি’ গ্রুপ থেকে সুপার ফোরে বাংলাদেশের সঙ্গী হলো শ্রীলঙ্কা। তবে ম্যাচ জিততে না পারলেও আফগানিস্তান জিতে নিল সকলের হৃদয়।

রান তাড়ায় নেমে আফগানদের শুরুটা মোটেও সুবিধার হয়নি। দলীয় ১০ রানে রহমানুল্লাহ গুরবাজকে (৪) ফেরান কাসুন রাজিথা। এরপর ইব্রাহিম জারদান (৭) এবং গুলবাদিন নাইব (২২) দ্রুত বিদায় নিলে ৮.১ ওভারে ৫০ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। অথচ, সুপার ফোরে যেতে হলে তাদেরকে ৩৭.১ ওভারের মধ্যে ২৯২ রান করতে হবে। এমন সময় প্রবল চাপে থাকা আফগানরা ঘুরে দাঁড়ায় অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদি আর রহমত শাহর জুটিতে। চতুর্থ উইকেটে দুজনে ৬৩ বলে ৭১ রানের জুটি উপহার দেন।

৪০ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৪৫ রান কর রহমতকে তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন রাজিথা। হাসমতুল্লার সঙ্গী হন মোহাম্মদ নবি। দুজনে মিলে শুরু করেন ঝড়ো ব্যাটিয়। বিশেষ করে নবি ছিলেন ব্যাট হাতে ভয়ংকর। পাথিরানাকে বাউন্ডারি মেরে ২৪ বলে তুলে নেন ফিফটি।

৪৭ বলে ৮০ রানের এই টর্নেডো জুটি ভাঙে মোহাম্মদ নবির বিদায়ে। বিধ্বংসী হয়ে ওঠা নবি ৩২ বলে ৬ চার ৫ ছক্কায় ৬৫ রান করে ফেলেছিলেন। বড় টার্গেটটাও তখন ছোট মনে হচ্ছিল। অবশেষে মহেশ থিকশানার বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন নবি। আফগান শিবিরে ছড়ায় হতাশা।

৫১ বলে ফিফটি পূরণ করেন হাসমতুল্লাহ। তার সঙ্গী হয়ে ব্যাটে ঝড় তোলেন করিম জানাত। ১৩ বলে ২২ রান করা করিমকে ৩১তম ওভারে থামান ডুনিথ ওয়েললাগে। একই ওভারের পঞ্চম বলে বিদায় নেন ৬৬ বরে ৩ চার ১ ছক্কায় ৫৯ রান করা হাসমতুল্লাহ। তবে থেমে যায়নি আফগানিস্তান। রশিদ খান আর নজিবুল্লাহ জারদান মিলে শুরু করেন ব্যাটিং তাণ্ডব। ১৪ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২৩ রান করা নজিবুল্লাহকে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেন রাজিথা। ভাঙে ২৩ বলে ৩৯ রানের ৮ম উইকেট জুটি। ৩৭তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন ওয়েললাগে। ওই সময় সুপার ফোরে যেতে আফগানদের প্রয়োজন ৭ বলে ১৫ রান।

প্রথম দুই বল ডট, তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান রশিদ খান। ওই ওভারে আসে ১২ রান। পরের ওভারে ১ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রানের। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার করা ওভারের প্রথম বলটিতেই ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান মুজিব উর রহমান (০)। তখনও শেষ হয়ে যায়নি আফগানিস্তানের সুপার ফোরের আশা। ম্যাচ পরিস্থিতির কারণে পরের তিন বলে একটা ছক্কা মারলেই তারা কোয়ালিফাই করতে পারত। কিন্তু আফগান দলের ব্যাটাররা সেটা জানতেন বলে মনে হয়নি! তাই সুযোগ শেষ ভেবে তারা হতাশ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ২৮৯ রানেই অলআউট হয় আফগানিস্তান। রশিদ খান অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ২৭* রানে। ২ রানের জয় পায় শ্রীলঙ্কা। কাসুন রাজিথা নেন ৭৯ রানে ৪ উইকেট।

এর আগে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৯১ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ৬৩ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা এবং দিমুথ করুনারত্নে। দুজনের মাঝে করুনারত্নে ৩৫ বলে ৩২ এবং নিশাঙ্কা ৪০ বলে ৬ চারে ৪১ রান করেন। তিনে নেমে সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন কুসল মেন্ডিস। ৫৩ বলে ফিফটি পূরণের পর তিনি বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। তার ৮৪ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংসটি থামে রানআউটে!

গতকালকের ম্যাচে জিতে ‘বি’ গ্রুপ থেকে সুপার ফোরে বাংলাদেশের সঙ্গী হলো শ্রীলঙ্কা। তবে ম্যাচ জিততে না পারলেও আফগানিস্তান জিতে নিল সকলের হৃদয়।

 

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.