ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক লাখ করে সুদমুক্ত ঋণ। শর্ত অনুযায়ী ঋণ পেতে যোগ দিতে হবে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত একটি সমাবেশে।
সমাবেশে যোগ দিতে রোববার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকশ নারী-পুরুষ নিয়ে ৫টি বাস ও ৭টি মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করে অন্তত দুই শতাধিক নারী ও পুরুষ।
যাত্রাপথে গাড়িগুলো উপজেলার কড়ইতোলা বাজারে আটকে দেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এ কাজের সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে আটক করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল হোতাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
মাইক্রো ড্রাইভার শামসুদ্দিন জানান, ঢাকা যাওয়ার জন্য শাহাবুদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আমারসহ ফজুমিয়ার হাট থেকে তিনটি গাড়ি ভাড়া করেছে। আমি আর কিছু জানি না, বুঝি নাই, গাড়ি ভাড়া ধরাইছে এজন্য ভাড়া নিয়ে রওনা হয়েছিলাম।
ভাড়া করা যাত্রীবাহী বাস ঢাকা এক্সপ্রেসের চালক মো. সোহেল জানান, আলমগীর ও সিরাজ নামে দুই ব্যক্তি ঢাকায় যেতে আমার বাস ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু এখন তারা গাড়ি থেকে সটকে পড়েছে।
এ সময় বাসে থাকা এক নারী জানান, আইডি কার্ডের কাগজ নিয়েছে আর ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা নিয়েছে। ওরা বলছে মুন্সিরহাট মিটিং হবে, অনেকে গেছে আমি যাই নাই। তবে ঢাকা গেলে তারা তদন্ত করে এক লাখ করে টাকা দিবে। তারা বলছে আমাদের মতো দেশের সব জেলা থেকে লোক আসবে আন্দোলনে অংশ নিয়ে ঋণ নেওয়ার জন্য। কিন্তু এতো কিছু বুঝতে পারি নাই, মনে করছি সবার যে গতি আমারও সে গতি হবে।
থানায় আটক নাজমা বেগম বলেন, করিম মিস্ত্রি আমাদের বলছে একলাখ টাকা লোন দিবে। আমাদের এক হাজার টাকা নিয়েছে গাড়ি ভাড়া। আমাদের বলছে ঢাকা যেতাম। মিটিং হবে, মিটিংয়ের পরে আমাদের এক লাখ টাকা দিবে। তারা বাড়ি যেতে বলছে গেলে মানুষ আমাদের আটক করে নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, ঋণ নিতে আগ্রহীদের প্রতারকরা ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে সম্মেলনে উপস্থিত হতে উদ্বুদ্ধ করে। ঋণের আবেদন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে তারা নিয়েছে এক হাজার টাকা। ঋণ প্রত্যাশী ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য দেওয়া হয়েছে টোকেন। টোকেনধারী সবাইকে দেওয়া হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ।
কমলনগর থানার ওসি তহিদুল ইসলাম জানান, ঢাকার একটা প্রতারক চক্র কমলনগরে কিছু এজেন্টের মাধ্যমে কমলনগরের সাধারণ হতদরিদ্র নারী-পুরুষের লোন দিবে বলে মোটিভেশন করে সরকারকে বিব্রত করার জন্য ঢাকায় নিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। ফলে স্থানীয়দের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তবে এখনো মূল হোতা বা চক্রান্তকারীদের শনাক্ত করতে পারিনি। মূল হোতাদের শনাক্ত করার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।